প্রভাষিকা রীতা গুপ্তা, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দীর্ঘ ৮ বছর পর গতকাল শনিবার দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দুই ইউনিয়নের পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ২১০০ বিঘা ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনে ৯০০ ফুট ক্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে। সকাল ১১টায় ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের পূর্বপ্রান্তে ক্যানেল খনন কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মিল্টন, বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল আলম সুমন, নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ আফরোজ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নীরু সামসুন্নাহার, থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মাহামুদুল হাসানসহ এলাকাবাসী, কৃষক, জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রায় ২ সহস্রাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বারাইপাড়া কবরস্থান থেকে পূর্বপ্রান্তে জলাবদ্ধ জমি পর্যন্ত ৫ ফুট প্রস্থে ৯০০ ফুট দৈর্ঘ্য ক্যানেলটি খনন করে পশ্চিমপ্রান্তের ছোট যমুনা নদীর পূর্বের ক্যানেলের সাথে সংযোগ দেওয়া হয়। এতে ওইসব জলাবদ্ধ জমির পানি ক্যানেল দিয়ে নদীতে নিষ্কাশিত হবে।
জানা যায়, উপজেলার খয়েরবাড়ী এবং দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তরের লালপুর গ্রাম থেকে দক্ষিণে দুর্গাপুর গ্রাম পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৪-৫ কিলোমিটার উত্তর দক্ষিণ এবং আধা থেকে পৌঁণে এক কিলোমিটার প্রস্থ বিশাল এলাকাজুড়ে প্রায় ২১০০ বিঘা জমির পানি কোথাও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দীর্ঘ ৮ বছর থেকে ওইসব জমিতে ফসলের মুখ দেখেননি কৃষকরা। ওই এলাকাজুড়ে রয়েছে শতাধিক পুকুর। মাছ চাষের জন্য পুকুর পাড় উঁচু করে বাঁধার কারণে এ জলাবদ্ধতা আরো তীব্র হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
গত ১৭ অক্টোবর শনিবার দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেন এবং খয়েরবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের বসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসীকে নিয়ে ওই জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশনের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল শনিবার ক্যানেল খননের মধ্যদিয়ে ওই ২১০০ বিঘা জমির পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর-খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের এই জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল। সকলের সহযোগিতায় ক্যানেল খননের কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন ওই ২১০০ বিঘা জমিতে আবারো ফসল ফলাবেন কৃষকরা। আবারো সবুজ ফলে ভরে উঠবে জমিগুলো। তবে ক্যানেল খননের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদেরকে যথাযত ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে ক্যানেল খননকাজের বিরোধীতা করে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ক্যানেল নির্মাণ করা এবং খননের পূর্বে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে বারাইপাড়া গ্রামের একাংশ গ্রামবাসী ক্যানেল খনন এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।