ভাঙনে দিশেহারা যমুনা পাড়ের মানুষ

ভাঙনে দিশেহারা যমুনা পাড়ের মানুষ

সিরাজগঞ্জ: অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানার যমুনা পাড়ের পাঁচটি গ্রামের মানুষ। জেলার শিক্ষা, চিকিৎসা ও তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানাধীন পাঁচটি গ্রামে গত পাঁচ বছর ধরেই ভাঙন চলছে।

 

চলতি বছর দীর্ঘ সময় বন্যা ও দফায় দফায় নদীর পানি কমা-বাড়ার কারণে ভাঙনের তীব্রতাও অনেক বেশি।

শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনায়েতপুর থানাধীন ব্রাহ্মনগ্রাম-আড়কান্দি থেকে পাঁচিল পর্যন্ত যমুনা তীরবর্তী প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জালালপুর ও খুকনী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম, পাকুরতলা, আরকান্দি, বাঐখোলা, ঘাটাবাড়ি, ভেকা, পুটিপাড়া, জালালপুরসহ ১০টি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর এবং কয়েকশ’ বিঘা ফসলের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এদিকে ভাঙন থেকে রক্ষায় স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধনে খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়, এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা এনায়েতপুরী (র.) মাজার রাস্তাঘাটসহ বহু মানুষের বাড়িঘর রক্ষার্থে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক রুখছানা ইসলাম বলেন, পাঁচ বছর ধরে এনায়েতপুরের দক্ষিণাঞ্চলে যমুনার ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে কয়েক হাজার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাঁত কারখানা, রাস্তাঘাট ও ফসলের জমি বিলীন হয়েছে। এতদিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েই আসছে। এখনও বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগই চোখে পড়ছে না।

ব্যবসায়ী মোখলেসুর রহমান বলেন, চলতি বছর টানা পাঁচ মাস ধরে যমুনার পানি কমা-বাড়া চলছে। এরই মধ্যে কয়েক দফা ভাঙনে অসংখ্য বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। আর কত বাড়িঘর নদীর পেটে গেলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে?

সমাজসেবক শাহ আলম ভুইয়া বলেন, যমুনায় পানি কমতে শুরু করায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে প্রতিদিনই নদীতে বিলীন হচ্ছে বহু মানুষের বাড়িঘর। কয়েকদিন ধরে ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে এক সপ্তাহে শতাধিক বাড়িঘর যমুনার পেটে

খুকনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁন ও জাললপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, এনায়েতপুরের খুকনী ইউনিয়নের আরকান্দি-থেকে জালালপুর ইউনিয়নের পাঁচিল পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় কয়েক বছর ধরে ভাঙন চলতে থাকলেও তা রোধে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। চলতি বছর দফায় দফায় ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের জনগণ।

বন্যার পানি কমতে শুরু করায় গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। এতে এ এলাকার মানুষগুলো অসহায় অবস্থায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রায় সাড়ে ছয়শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প পাস হলেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন