কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
উজানের ভারী বৃষ্টির ঢলে কুড়িগ্রামে আবারো পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসল। পানি বাড়ার সাথে সাথে তীব্র হয়ে উঠেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তার ভাঙন। পর পর ৫ম দফা বন্যায় নদী পাড়ের মানুষজন ফসল হারানোর পাশাপাশি ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।
সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, এ বছর বন্যায় নদী পাড়ের মানুষেরা খুবই কষ্টে দিনে পার করছে। পানি নেমে যাওয়ার পর মানুষজন যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখনই আবারও বন্যার পানি এসে ফসলসহ ঘর-বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এ ছাড়াও আমার ইউনিয়নের গত দুই সপ্তাহে অনন্ত শতাধিক ঘর-বাড়ি ধরলা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
দ্রুতগতিতে পানি বাড়ায় ৫ম দফা বন্যার ২য় দিনে কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজলার শতাধিক চর নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ডুবে গেছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যাবস্থা। নৌকা ও কলাগাছের ভেলাই যোগাযোগের মাধ্যম বানভাসিদের। প্রায় ৫ হাজার হেক্টরের বেশি আমন ও সবজি ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। ঘরবাড়িত পানি ওঠায় অনেকেই পরিবার ও গবাদী পশু নিয়ে বাঁধ ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। বন্যাকবলিতদের মাঝে দেখা দিয়েছে শুকনা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির সংকট। ধরলা অববাহিকার কয়েকটি গ্রামে প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে শতাধিক ঘর বাড়ি। পানি বাড়ার ফল বিভিন্ন এলাকায় নদ-নদীর ভাঙন তীব্ররুপ ধারণ করেছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে বসতভিটা, রাস্তা ও বাঁধ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এ বন্যার পানি দীর্ঘ স্থায়ী হবে না। দু’একদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে। আর এই মুহূর্তে যেসব এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে সেসব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকানো চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আশা করছি পানি কমে গেলে ভাঙনও কমে আসবে।