ঢাকা: মহানুভবতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফের কারাগারে পাঠানোর জন্য দাবি উঠতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসামায়িক ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিআরপিসির যে ধারার ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে কারগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেভাবে কথাবার্তা বলছেন এবং তাদের অন্যান্য নেতারা যে কথাগুলো বলছেন এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা না দেখাইলেই ভালো হতো। কারণ তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি তার তো কারাগারেই থাকার কথা ছিল। তিনি আদালত থেকে তো জামিন পাননি। তাকে প্রধানমন্ত্রী তার সিআরপিসির ক্ষমতাবলে প্রথমে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছেন, পরে আরও ছয় মাস সেটি বর্ধিত করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
‘মির্জা ইসলাম আলমগীরের উচিত ছিল এ মহানুভবতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো, সেটির পরিবর্তে তিনি যে কথাবার্তা বলছেন বা তাদের অন্য নেতারা যে কথাবার্তা বলছেন এতে মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতা না দেখালে বরং ভালো হতো এবং ভবিষ্যতে যখন এ প্রসঙ্গ আসবে তখন জনগণের পক্ষ থেকে হয়তো বলা হতে পারে বা এখনই বলা হতে পারে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের অন্যদের বক্ত্যবের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ফের কারাগারেই…, যেহেতু তিনি আদালতের মাধ্যমে জামিন পাননি সেজন্য তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হোক। এ দাবি উঠে কিনা, সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন। ’
হাছান মাহমুদ বলেন, হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে বিএনপির উন্মেষ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই ক্ষমতা দখল করে দল গঠন করেন। সেই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনীর জোয়ান-অফিসারদের হত্যা করা, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের শত শত হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। খালেদা জিয়াও সেই হত্যার রাজনীতি অব্যাহত রেখেছেন।
খালেদা জিয়ার অনুমোদনক্রমে এবং তার ছেলে তারেক রহমানের পরিচালনায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়েছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল। হত্যার রাজনীতিটাই হচ্ছে তাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।
মাদ্রাসার বিশৃঙ্খলা মানসিক চাপ তৈরি করেছিল
নিজ নির্বাচনী এলাকায় হেফাজতে আমির আল্লামা শফীর মাদ্রাসায় বিক্ষোভ এবং তার পদত্যাগ নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি আলেম সমাজের সর্বজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। এটি তার নামাজে জানাজায় প্রমাণ করেছে। তিনি আলেমদের মধ্যে এবং ওই অঞ্চলে কী পরিমাণ জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার এ হঠাৎ মৃত্যু নিয়ে অনেক কথা আছে। তিনি আগেও বহুবার এ রকম অসুস্থ হয়েছেন, কিন্তু প্রতিবারেই তিনি সুস্থ হয়ে ফের মাদ্রাসায় ফিরেছেন।
‘হাটজাজারি মাদ্রাসার ভেতরে যে বিশৃঙ্খলা সেটি হাটহাজারী মাদ্রাসার আভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু তিনি যেহেতু হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন, মাদ্রাসার ভেতরে তার উপস্থিতিতে যে বিশৃঙ্খলা সেটি নিশ্চয়ই তার ওপর মানসিক চাপ তৈরি করেছিল। সেটির সঙ্গে তার সুস্থ হয়ে ফিরে না যাওয়া, সেটির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সেটি আসলে চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবেন। তবে নিশ্চয়ই তার ওপর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যে কয়দিন ধরে চলেছে সেটিতে মানসিক চাপ তৈরি হওয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে সেটি স্বাভাবিক। ’