চট্টগ্রাম: নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, মিশরসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ এস আলম রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকে এলসি খুলছে।
এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাহউদ্দিন আহম্মদ জানান, সংকট মোকাবিলায় সরকার ও দেশের চাহিদা মোতাবেক আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে চাই।
এক মাসের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এসব পেঁয়াজ বাজারে ঢুকবে।
তিনি বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। প্রয়োজনে কার্গো বিমানে করে দ্রুত পেঁয়াজ এনে দেশের বাজার সামাল দিতেও আগ্রহী আমরা। তবে এক্ষেত্রে বিমানভাড়া জাহাজের চেয়ে অন্তত ছয়গুণ বেশি। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে আমদানির অধিকাংশ পেঁয়াজই আসে ভারত থেকে। দেশের হিলি, বেনাপোল, সাতক্ষীরার ভোমরাসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে এসব পেঁয়াজ দেশে আসতো। দেশে বর্তমানে প্রতি বছর চাহিদা হলো আনুমানিক ৩৫ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। বাকি পেঁয়াজের সিংহভাগ আমদানি করা হতো ভারত থেকে। কিছু পেঁয়াজ আসে মিয়ানমার ও চীন থেকে।
জানা গেছে, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক ও চীন থেকে সমুদ্রপথে জাহাজে করে পেঁয়াজ আনতে মূল সমস্যা হলো নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কন্টেইনার (রিফার) অর্থাৎ কোল্ড স্টোরেজের (যার তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি পর্যন্ত) বুকিং পাওয়া। এ ধরনের বিশেষ কন্টেইনারে সর্বোচ্চ ২৫ টন ধারণক্ষমতা। আর এ ধরনের কন্টেইনার না পেলে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম শিপিং প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনার পরিচালক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবীর বলেন, ‘রিফার কন্টেইনারে করে এত বিপুল পরিমাণ পণ্য একসঙ্গে আনা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একইসঙ্গে এর ভাড়াও তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এভাবে দ্রুত পেঁয়াজ আনা সম্ভব। ’
এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে দেশের বাজার স্থিতিশীল করার সকল বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
দেশে পেঁয়াজ, তেল, চিনি, গমসহ নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিলেই এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ নিজে উদ্যোগ নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে জাহাজভর্তি পণ্য এনে বাজারজাত শুরু করেন। এতে করে দ্রুত এসব পণ্যের দাম পরে যাওয়ার নজির রয়েছে। এরকম ঝুঁকি নেওয়ার কারণে অনেক সময় লোকসানও গুণতে হয় বলে জানা গেছে।