আমূল পরিবর্তন  আসবে  উত্তরপূর্ব ভারত-বাংলাদেশের কানেক্টিভিটিতে

আমূল পরিবর্তন  আসবে  উত্তরপূর্ব ভারত-বাংলাদেশের কানেক্টিভিটিতে

ঢাকাদিল্লি-ঢাকার সুসম্পর্কের জেরে উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের যে নতুন কানেক্টিভিটি গড়ে উঠছে তাতে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং আমূল পরিবর্তন আসবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।

সম্প্রতি সিকিমের আইসিএফএআই বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও যোগাযোগ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন।

শ্রিংলা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের চিলাহাটি পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেলপথের কাজ শেষ হলে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী দার্জিলিং মেল আবার সেই পুরনো পথে চলতে পারবে। শিয়ালদা থেকে শিলিগুড়ি যেতে (বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে) সময় লাগবে মাত্র সাত ঘণ্টা।

‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশনীতির মূল স্তম্ভ নেইবারহুড ফার্স্ট (সবার আগে প্রতিবেশীরা) ও অ্যাক্ট ইস্ট (পূর্বমুখী নীতির বাস্তবায়ন) পলিসি। যার সুবাদে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির নতুন নতুন দিগন্ত খুলে যাচ্ছে। ফলে উপকৃত হচ্ছে উভয় ভূখণ্ডই। ’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজও শেষের পথে। দুই দেশের নাগরিকরা শুধু মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসেই রেলপথে যাতায়াত করতে পারছেন তা-ই নয়, ঢাকা থেকে শিলং এবং আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে কলকাতা রুটেও বাসে সীমান্ত পারাপার করছেন অজস্র যাত্রী।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ছয়টি রেল সংযোগ চালু ছিল। এর মধ্যে আজকের বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চারটি রেল সংযোগই আবার চালু হয়ে গেছে। আর বাকি দু’টি চালু হওয়ার অপেক্ষায়।

‘উত্তর-পূর্ব ভারত আর বাংলাদেশকে সংযুক্ত করে রেখেছে একটি অভ্যন্তরীণ নদী নেটওয়ার্ক। এই পথে নৌ আর পণ্য চলাচল উৎসাহিত করতে ব্রহ্মপুত্র আর বরাক অববাহিকা জুড়ে মোট কুড়িটি বন্দরনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা সমগ্র অঞ্চলের মাল্টিমোডাল লিঙ্কেজকেই (বহুমুখী সংযোগ) আমূল বদলে দেবে। ’

এছাড়া আশুগঞ্জ নদী-বন্দর হয়ে এবং তারপর আখাউড়া-আগরতলা সড়কপথেও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহন শুরু হয়ে গেছে।

শ্রিংলা বলেন, ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার পর কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য পণ্যের প্রথম চালান দিনকয়েক আগেই বাংলাদেশে ভিড়েছে। গোমতী নদী দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্যের চালান গেছে ভারতের ত্রিপুরাতেও।

বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের যে ভৌগোলিক নৈকট্য, সে কারণে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও প্রসেসড ফুডের বিরাট চাহিদা রয়েছে ভারতের ওই রাজ্যগুলোতে। এই বাণিজ্যের প্রসারের জন্য স্থল বন্দরগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে, তাতে দু’দিকেই কর্মসংস্থান বাড়বে ও উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

এভাবে একের পর এক দৃষ্টান্ত দিয়ে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভবিষ্যৎ কীভাবে বাংলাদেশের সহযোগিতার ওপর নির্ভর করেছে। নিজের ভাষণে তিনি জাপানের সহযোগিতার প্রসঙ্গও এনেছেন। কিংবা মিয়ানমার-ভুটান-নেপালও কীভাবে এই ‘বাংলাদেশ মডেল’ প্রয়োগ করতে পারে সে কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তার বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়েই ছিল বাংলাদেশ।

 

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

মমতার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে অভিযোগ গৃহীত

আরও তিন অঙ্গরাজ্য ট্রাম্পের ঝুলিতে