রিজভীর কাছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ

রিজভীর কাছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে  অভিযোগ

ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এস এম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন গত সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত আট কাউন্সিলর প্রার্থী। শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তারা এ লিখিত অভিযোগ জানান।

এস এম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে বিএনপির সিনিয়ন যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে লিখিত আবেদনে ঢাকা-১৮ আসন এলাকায় ১৪ টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ৮ জন প্রার্থী সই করেন। এতে তারা এস এম জাহাঙ্গীর ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আঁতাত করে বিভিন্ন মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কাগজও সংযুক্তি করেন।

আট কাউন্সিলর প্রার্থীর অভিযোগে বলা হয়, গত সিটি নির্বাচনে এস এম জাহাঙ্গীর ও তার যুবদলের নেতাকর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাথে আঁতাত করে। নির্বাচনের দিন বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থীর জন্য তার দেওয়া এজেন্টদের কেউই কেন্দ্রে যায়নি। নির্বাচনী মাঠে মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে এস এম জাহাঙ্গীর প্রচারণার সুযোগ নিলেও নির্বাচনের দিন ছিলেন নিষ্ক্রিয়। যার কারণে তার নিজ কেন্দ্রে ধানের শীষ ভোট পায় মাত্র ১৯টি। যা এমপি নির্বাচন করার জন্য একজন প্রার্থীর অযোগ্যতা হিসেবে ধরা যেতে পারে।

তারা বলেন, এস এম জাহাঙ্গীরের সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সম্পর্ক থাকায় তার ইন্ধনে বিএনপির দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তার সমর্থিত পাঁচজন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনের আগমুহূর্তে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে আঁতাত করে মাঠ ছেড়ে দেয়। যার স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে, এস এম জাহাঙ্গীর সমর্থিত একজন প্রার্থী বাদে বাকি সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং আমাদের একজনের সমান ভোটও পায়নি বাকি ৪ প্রার্থী। এছাড়া এস এম জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে আঁতাত করে ৪৭ নং ওয়ার্ডে তার অনুগত হেলাল উদ্দিন তালুকদারকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে রাখে। যা দলের প্রতি অবাধ্য আচরণ।

এছাড়া তার অনুগত বিএনপির দুটি থানার সভাপতি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে মিছিল করেছেন, নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ছিলেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে বাড়ি বাড়ি ভোটও চেয়েছেন।

চিঠিতে ঢাকা-১৮ আসনে ছাত্রদলের ৪০ জন পদধারী নেতার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্রও সংযুক্তি করা হয়। যেখানে ছাত্রদল নেতারা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে অভিযোগ করে বলেছেন, এস এম জাহাঙ্গীর ও তার মামা শ্বশুর উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আরেক মামা শ্বশুর বাহাউদ্দিন বাবুল (প্রয়াত) জাতীয় পার্টি নেতা এবং প্রশাসনের সহায়তায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দলীয় কর্মসূচিতে বর্বরোচিত হামলা করে তাদের ১০জনকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ছাত্রদল নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে এস এম জাহাঙ্গীর মুক্ত উত্তরা চাই বলে মানববন্ধনও করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সিটি নির্বাচন অনেক আগে হয়েছে। অভিযোগ থাকলে তখন দিতে পারতো। ইতোমধ্যে বিচারও হয়ে যেত। কিন্তু তা না করে সামনে আর একটি নির্বাচনের সময় এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ ওঠানো হয়েছে।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর বলেন, আপনারা যাচাই বাছাই করে দেখেন। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তারা নিজেরাও এ বিষয়ে জানে কি না সন্দেহ আছে।

তবে অভিযোগকারী ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী দেওয়ান মো. নাজিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা অভিযোগ দিয়েছি। দল এখন তদন্ত করে দেখুক সত্য কি মিথ্যা।

তিনি বলেন, উনি (জাহাঙ্গীর) কাউন্সিলর প্রার্থীদেরতো সহযোগিতা করেননি, মেয়র প্রার্থীর সহযোগিতা করেছে কি না তাকে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্ত্রীর খোলা চিঠি

পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন নুর