পাবনার সুজানগরে মাছ চাষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। রবিবার বিকেলে উপজেলার রানীনগর ইউনিয়নের ভাটিকয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ অস্ত্রসহ ৫ জনকে আটক করেছে। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ রানীনগর ইউনিয়ন পরিষদের ০৮ নং ওয়ার্ড সদস্য রশিদুল ইসলাম রাশু, ভাটিকয়া গ্রামে একটি জলাশয়ে মাছ চাষ করা নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা খাইরুল মাস্টারের সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবের সমর্থক ও রাণীনগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহীনের দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সালিশের মাধ্যমে জলাশয়ের স্বত্ব নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি হয়।
রবিবার দুপুরে সালিশের সিদ্ধান্ত না মেনে শাহিনের পক্ষের লোকজন জোরপূর্বক মাছ ধরতে এলে গ্রামবাসী বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিন ও তার লোকজন অতর্কিতে হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এত কমপক্ষে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
খবর পেয়ে আমিনপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন নেয়।
আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জলাশয়টি দখলে নেয়াকে কেন্দ্র করে ঐ ইউনিয়নের বিবাদমান দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত একটি লাইসেন্স করা বন্দুকসহ জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, ভাটিকয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাকিব (২৭), শাহাদত হোসেনের ছেলে রাজিব খান (৩০), মৃত মানিকের ছেলে উজ্জল (৩২), আবদুল বাতেনের ছেলে রায়হান (৩২), মোঃ হোসেনের ছেলে জিন্নাহ সর্দার (২৭), হাসেন আলীর ছেলে সেলিম (২৬) শাহিন (২৪) ও শাকিব (২০), ইব্রাহিমের ছেলে রফিকুল (৩২), মৃত ইদ্রিসের ছেলে রাশু মেম্বর (৪০), আব্দুল মতিনের ছেলে পেয়ারা ( ৩৮), মৃত হাকিমের ছেলে আমজেদ (৩২), সিদ্দিক খানের ছেলে আমির (৩৩) সহ কয়েক জন।
এ ব্যপারে সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহাবের প্রত্যক্ষ মদদে রাণীনগর যুবলীগের সভাপতি শাহিন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। রবিবার আব্দুল ওয়াহাবের নির্দেশেই জোরপূর্বক জলাশয়ের দখল নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে। আমি এ বিষয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারেরও দাবি জানাচ্ছি।
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব বলেন, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিএনপি জামাতের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে জলাশয়টি অবৈধ দখলে রেখেছিল। আওয়ামী লীগের লোকজন সেখানে মাছ ধরতে গেলে প্রতিপক্ষরা তাদের মারধোর করলে সংঘর্ষ হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলে গ্রুপিং সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে।
আমি এ ব্যপারে দলের নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ করব।