মুন্সিগঞ্জ: পদ্মাসেতুর রেলওয়ের মালামাল নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছে সাতটি ট্রাক। গত ২৭ আগস্ট সকাল থেকে এসব ট্রাক পারের অপেক্ষায় আছে।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্তও পার হতে পারেনি এসব ট্রাক।
চালক আওলাদ হোসেন বলেন, আমার ট্রাকের সিরিয়াল ১০ নম্বরে। ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পার হতে পারছি না। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার জন্য ছয়-সাত হাজার টাকার মতো লাগবে। তাতে ঠিকাদার রাজি হচ্ছে না। আমরা চালকসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছি খুব কষ্টে দিনযাপন করছি। অর্থ সংকটের পাশাপাশি খাদ্য সংকটেও ভুগছি। জমানো টাকা সব শেষ হয়ে গেছে।
আওলাদ হোসেনের মতো একই অবস্থা পারের অপেক্ষায় থাকা বাকি চালকদেরও।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টা থেকে পদ্মার তীব্র স্রোত ও নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে দ্বিতীয় দিনেও ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। শুক্রবার দুপুরে ঘাট এলাকায় পারের অপেক্ষায় দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান রয়েছে।
চালকরা জানান, অনেকের মোবাইল, টাকা পয়সা চুরি হয়ে গেছে। রাতে গাড়িতেই ঘুমাতে হয়। আশপাশে যেসব খাবারের দোকান আছে এসবে খরচ অনেক বেশি। ঘাট এলাকায় প্রচণ্ড গরম। অনেক চালক অসুস্থ হয়ে গেছে। আশপাশে একটুও ছায়া নেই। নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে মালামাল পৌঁছানোর। ঢাকায় বাসা ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে এমন পিকআপ ভ্যানগুলোর মানুষজনও বিপাকে পড়েছেন। ৮-১০ দিন ধরে চালকদের এরকম পরিস্থিতিতে কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি।
শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ জানান, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে বহরে থাকা ১৬টি ফেরির মধ্যে তিনটি ফেরি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে পাঠানো হয়েছে। কিছু ট্রাক চলেও গেছে শিমুলিয়া ঘাট থেকে। বেশিরভাগ ট্রাক ৮-১০ দিন পর্যন্ত ঘাটে অবস্থান করছে পদ্মা পারের জন্য। ঘাট এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আছে।
বিআইডব্লিউটিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, বর্তমানে ১৩টি ড্রেজারের মধ্যে ৯টা ড্রেজার চ্যানেলগুলোতে পলি অপসারণে কাজ করছে। পদ্মাসেতুর চ্যানেলে ২৫ হাজার ঘনমিটারের বেশি পলি অপসারণ করা হয়েছে। টার্গেট আছে এই চ্যানেল থেকে ৮০ হাজার ঘনমিটার পলি অপসারণ করার। তিন-চার দিন সময় লাগতে পারে পদ্মাসেতুর চ্যানেলে নাব্য সংকট দূর করতে।