ঢাকা: দেশে চার দফায় মোট ৪৬ দিন বন্যা স্থায়ী হয়েছে। এর মধ্যে আগামী সেপ্টেম্বর শেষে আরেকটি বন্যা হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান বন্যার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর আরও বন্যা হওয়ার কোন আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ পূর্বাভাস দিয়েছেন— এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আরেকটি বন্যা হতে পারে। অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা আছে।
এবারের বন্যা ১৯৯৮ সালের বন্যার থেকে দীর্ঘস্থায়ী নয় জানিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৮ সালের বন্যা ছিল ৬৯ দিন, এবারের বন্যা ছিল ৪৬ দিন। আর ক্ষয়ক্ষতিও ১৯৯৮ সালের বন্যার চেয়ে এবার কম। ’৯৮ সালে প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। এবার আমাদের প্রায় ৩০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বন্যায় খাদ্যশষ্যের ঘাটতি হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি মজুত আছে ১৩ লাখ মেট্রিক টনের উপরে। আট লাখ মেট্রিক টন থাকলে মনে করি নিরাপদ। আরও খাদ্য সংগ্রহের কাজ চলছে, এ মাসের মধ্যে ১৫ লাখে পৌঁছে যাবে।
বন্যা দীর্ঘায়িত হলে বরাদ্দ আরও বাড়বে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে বরাদ্দ আছে সেটা দিয়ে আমরা মোকাবিলা করতে পারব।
এনামুর রহমান বলেন, এবার চার দফায় বন্যা হয়েছে। ২৬ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়, এরপরে ১০ জুলাই দ্বিতীয় দফায় এবং ১৯ জুলাই তৃতীয় দফায় এবং চতুর্থ দফায় গত ১৮ জুলাই থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা এবং সাতক্ষীরা জেলায় অতিরিক্ত জোয়ার, সমুদ্রের লঘুচাপ এবং উজানের পানির কারণে প্লাবিত হয়।
তিনি বলেন, আমরা সবগুলো বন্যা কবলিত এলাকার জনগণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা বিতরণ করেছেন।
বন্যা ও দুর্যোগ প্রস্তিতি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটি এসওডি (স্ট্যান্ডিং অর্ডার অন ডিজাস্টার) বা দুর্যোগ স্থায়ী কার্যাদেশ দিয়েছেন। এটা পাওয়ার পর আমাদের কাজ সহজ হয়েছে, কখন কোন অবস্থায় কে দুর্যোগে প্রথম রেন্সপন্স করবে, কে কাজটি করবে সেটি ভাগ করে দেয়া হয়েছে। কাজেই যেকোনো দুর্যোগের পূর্বাভাস পেলে আমরা এসওডি অনুযায়ী কাজ করি এবং সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুত আছি।