কোয়ার্টার ফাইনালে আটলান্টার বিরুদ্ধে গোলের সামনে তার বাউন্ডুলেপনার খেসারত দিতে হতে পারত দলকে। শেষ মুহূর্তে জোড়া গোলে থ্রিলার জয়ে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল সবকিছু।
সেমিফাইনালে লেইপজিগের বিরুদ্ধেও গোলের সামনে একেবারেই সাবলিল ছিলেন না। তবুও উতরে গিয়েছিল দল। কিন্তু রবিবার ফাইনালের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ তো আর আটলান্টা কিংবা লেইপজিগ নয়। স্বাভাবিকভাবেই পিএসজি তারকা নেইমার দি স্যান্তোস জুনিয়রের একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ফাইনালের পর বেশি করে প্রকট হল। আর তার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা ফালা-ফালা করে দিচ্ছে ব্রাজিলের ‘ওন্ডার-কিড’কে।
লিসবনে তীরে এসেও তরী ডুবল পিএসজি’র। খুব কাছে গিয়েও খেতাব হাতে নিয়ে ভিকট্রি ল্যাপ না দিতে পারার যন্ত্রণা ম্যাচ শেষে কুরে-কুরে খাচ্ছিল নেইমারকে। হারের পর যে ভালোই কেঁদেছেন সেটা টেলিভিশনের পর্দায় দেখেই স্পষ্ট। কিন্তু দলের এই হারের পিছনে খোদ নেইমারকেই কাঠগড়ায় তুলছেন বিশেষজ্ঞ থেকে অনুরাগীরা।
ব্রডকাস্টিং চ্যানেলে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় থাকা লিভারপুল, ম্যান সিটির প্রাক্তন ডেভিড জেমস বলছেন, তিন বছর ৪৫০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ব্রাজিলিয়ানকে দলে নেওয়া অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। প্রাক্তন গোলরক্ষকের কথায় লিসবনে মেগা ফাইনালে যে ফুটবলটা নেইমার উপহার দিয়েছে সেটা ভীষণ হতাশাজনক। রানার্স হয়ে পিএসজি’র সন্তুষ্ট থাকার পিছনে নেইমার অন্যতম কারণ।
এদিন ম্যাচের ১৯ মিনিটে সতীর্থ এমবাপের বামপ্রান্তিক বাড়ানো বল ধরে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে যে মিসটা নেইমার করলেন তার মূল্য চোকাতেই হত দলকে। যদিও নুয়েরের শৈল্পিক দক্ষতা এক্ষেত্রে কোনওভাবেই খাটো হওয়ার নয়। নেইমারের পাশাপাশি গোল মিসের নিরিখে পাল্লা দিলেন এমবাপেরাও। সব দেখে শুনে জেমস বলছেন, প্রথমত আমার মনে হয় নেইমারের পিছনে অর্থের অপচয় বন্ধ করে পিএসজি’র উচিত ওর পরিবর্ত খোঁজা।
ফাইনালে নেইমারের পারফরম্যান্সে হতাশ বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউডও। ২০২০ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালকে নেইমারের জন্য ‘দুঃস্বপ্নের রাত আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তার কথায়, নেইমার একা অনেক কিছু করতে গিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে বোঝাপড়া গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
প্রাক্তন কোচকে সমর্থন করে অতিথি সুনীল ছেত্রী জানিয়েছেন, ‘আমি নেইমারকে শেখানোর কেউ নই তবু গোল নষ্টের পর নেইমারের স্বাভাবিক খেলাটা চালিয়ে যাওয়ার দরকার ছিল।’
একইসঙ্গে ম্যাচ শেষে ব্রাজিলিয়ানের কান্না দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় মশকরা করতেও ছাড়েননি অনুরাগীরা। কেউ নেইমারের কান্নাকে ‘কুমীরের কান্না’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তো কেউ আবার বলছেন, খেলার চেয়ে ভালো কাঁদতে পারেন নেইমার।