অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা; একটু বৃষ্টিতেই হাঁটু জল

অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা; একটু বৃষ্টিতেই হাঁটু জল

মাগুরা: পানি নিষ্কাশনের অব্যবস্থাপনার কারণে মাগুরা শহরে অনেক এলাকায় একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সম্প্রতিক বৃষ্টিতে শহরের ছায়াবিথি সড়ক, পশু হাসপাতাল পাড়া, বাটিকাডাঙ্গা, কলকলিয়াপাড়া, খানপাড়ায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

শনিবার (২২ আগস্ট) শহরের পশু হাসপাতাল পাড়া, ও ছায়াবিথি পাড়া ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়া বৃষ্টির পানি স্থানীয় বস্তি এলাকায়সহ দুই শতাধিক বাড়িতে ঢুকে পড়েছে।

বৃষ্টির পানির সঙ্গে বন্ধ থাকা ড্রেনের ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি একাকার হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় গোটা এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

বস্তি এলাকার মানুষ জানান, একটু বৃষ্টি হলে তাদের ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। বর্তমানে এই পরিস্থিতি আরো চরম আকার ধারণ করেছে। এলাকায় থাকা পৌরসভার ড্রেনটি বর্তমানে একেবারেই বন্ধ রয়েছে। যে কারণে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি তাদের ঘরে ঢুকে পড়ছে। কেউ কেউ বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন। একই অবস্থা শহরের অনেক এলাকায়।

পশু হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা মনিরা বেগম জানান, একটু বৃষ্টি হলেই আমাদের বাড়ি ঘরে পানি চলে আসে। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার ড্রেনের মুখ বন্ধ থাকায় আমাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ বাসা বাড়িতে কাজ করে খাই। কি করব পানির জ্বালায় কোথাও বের হতে পারছি না। নোংরা পানির কারণে শরীরে দেখা দিয়েছে চুলকানি। এর জন্য প্রতিনিয়ত দেড়শ টাকার ওষুধ খাতি হচ্ছে আবার পায়েও মাখতে হচ্ছে। রান্না ঘরে চুলায় পানি জমে থাকায় রান্নাও বন্ধ রয়েছে। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। তিন দিন ধরে খিচুরি রান্না করে খাইতেছি। আমাদের দেখার কেউ নেই।

তিনি আরো বলেন, খাওয়ার পানির কলের মধ্যে কেচো, সাপ, ব্যাঙ মশা, মাছি থাকে যে কারণে পানিও পান করতে পারি না। প্রচণ্ড দুর্গন্ধে বাড়ি ঘরে থাকা যায় না। গরম কালে যদি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এই ড্রেনের কাজ করত তাহলে আমাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হত না।

শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাটিকাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা হাজি আব্দুল খালেক মোল্ল্যা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। পৌরকর্তৃপক্ষকে কয়েকবার অবহিত করলেও তারা কোনো কাজ করেনি। এই এলাকায় একটু বৃষ্টি হলেই বসতঘরে হাটুঁ পানি জমে। কোথাও বের হওয়া যায় না। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় মশার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষ সময় মত মসজিদে যেতে পারে না।  তিনি দাবি করেন এই এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা যদি ভাল করা হত তাহলে মানুষ উপকার পেত।

এলাকার বাসিন্দা নূর বেগম জানান, রাতের বেলা সাপ, ব্যাঙের ভয় করে। এছাড়াও মশা, মাছি, কেচো ও প্রচণ্ড দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। আমরা ঘরে কোনো কাজই করতে পারি না। আমাদের হাতে পায়ে চুলকানি হয়ে গেছে। সব সময় ভয়ে থাকতে হয় বাড়ির ছোট শিশুর পানিতে পড়ার। তাই আমি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই আমাদের এলাকায় একটা ড্রেনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।

মাগুরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মকবুল হাসান মাকুল বলেন, মাগুরা শহরে যে সব স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সেখানে ইতোমধ্যে ড্রেন তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। তবে শহরে কিছু এলাকা অতি নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলে পানি জমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছি। অল্প সময়ের মধ্যে জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশা করি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

জ্বালাও-পোড়াও করে সরকার পরিবর্তন করতে পারবে না বিএনপি: সালমান এফ রহমান

বাকেরগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত