গাইবান্ধায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই না মেলায় গভীররাতে পরিত্যক্ত ঘরে জেমি বেগম নামে এক নারীর সন্তান প্রসবের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে কেন্দ্রের দুই চিকিৎসকসহ তিনজনকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।
বদলিকৃতরা হলেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. আফসারী খানম ও ডা. সেকেন্দার আলী এবং পরিদর্শিকা সেলিনা আক্তার।
এর মধ্যে ডা. আফসারী খানমকে লালমনিরহাটে এবং ডা. মো. সেকেন্দার আলীকে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। এছাড়া পরিদর্শিকা সেলিনা আক্তারকে শনিবার (১৫ আগস্ট) সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়।
ঘটনার পরপরই জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কনসালট্যান্ট ডা. ফারুক আজম নূরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুইজন মেডিক্যাল অফিসারকে ও শনিবার (১৫ আগস্ট) কেন্দ্রের একজন পরিদর্শিকাকে শাস্তিমূলক বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) দিনগত গভীর রাতে প্রসববেদনা নিয়ে গাইবান্ধায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আসেন সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার এলাকার রহিম মিয়ার স্ত্রী জেমি বেগম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি না করে অন্য হাসপাতালে যেতে বলে। কোনোভাবেই এখানে ভর্তি হতে না পেরে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে তার প্রসববেদনা তীব্র হয়। এ সময় দ্রুত তার স্বজনরা তাকে শহরের ডিবি রোডের পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে যান। সেখানেই তিনি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ মা ও শিশুকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিবাদ-নিন্দার ঝড় ওঠে।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মিষ্টি আকতারকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেন কেন্দ্রের সিনিয়র স্বাস্থ্যকর্মী তৌহিদা বেগম। কেন্দ্রের কয়েকশ’ গজ দূরে ইজিবাইকে সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করা হলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।