লঘুচাপের কারণে উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপর দিয়ে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এতে ১২টি উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল ১ থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।সম্প্রতি আম্পানের প্রভাবে প্লাবিত ওইসব এলাকার মানুষ এখনো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরইমধ্যে আবারও একই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা–গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।এই অবস্থায় উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে। সাগর উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।এদিকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং কুমিল্লা অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ–পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর নৌ–হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অঞ্চলসগুলোর ওপর দিয়ে একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোতে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।এখন উত্তর–পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর উড়িষ্যা–গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর–পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজমান।এই কারণে খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের কারণে সারাদেশে তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি কমবে।