সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। শুরুতে র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জামিল আহমদকে এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিল। তার স্থলে নতুন একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে। ফলে বৃহস্পতিবার আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার কথা থাকলেও কারাগার থেকে না নিয়েই ফেরত গেছে র্যাবের একটি টিম।
শুক্রবার তাদের রিমান্ডে নেয়ার জন্য র্যাব-১৫ এর একটি টিম কারাগারে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান কারা সুপার।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কিছু সমস্যার কারণে সিনহা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। শিগগিরই নতুন একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। এরপর আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ৪ জন আসামিকে রিমান্ডে নেয়ার কথা ছিল। সব কিছু ঠিক থাকলে শুক্রবার (আজ) তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তবে, শুক্রবার সকাল ১০টায় কক্সবাজার কারাগারের সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, র্যাব-১৫ জানিয়েছেন তারা কারাগারে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসামীদের বেশ কয়েকজনকে আজকে রিমান্ডে নেয়া হবে। আমরা সেভাবেই তৈরি হয়ে আছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে গিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাবের একদল সদস্য। তারা দীর্ঘক্ষণ জেল সুপারের অফিসে বসেছিলেন। পরে আসামিদের না নিয়ে ফিরে যান। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া ৪ আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে বৃহস্পতিবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ছিল।
গত ৮ ও ৯ আগস্ট কক্সবাজার কারাগার ফটকে ৪ আসামি-কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় র্যাব। ফলে তাদেরকে আরও ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ড চেয়ে ১০ আগস্ট আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আহমদ। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের জন্য ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এই মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে গত ৬ আগস্ট সাত দিনের রিমান্ড আদেশ দেন আদালত। তবে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার ৭ আসামির কাউকে এখনো পর্যন্ত রিমান্ডে নেয়নি র্যাব।
গত ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে খুন হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস পুলিশের ৯ জনকে আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ আগস্ট হত্যা মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে এর আগে রামু ও টেকনাফ থানায় ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এই ৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে সিনহার সঙ্গি সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রাণী দেবনাথকে। ৪টি মামলারই তদন্তভার এখন র্যাবের হাতে।