রাজধানীর ডেমরা থানাধীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের নলছাটা, দুর্গাপুর, তাম্বুরাবাদ, ধিৎপুর, খলাপাড়া, ঠুলঠুলিয়া, আমুলিয়া-মেন্দিপুর এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো বালু নদের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নলছাটার কিছু বাড়ি ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। খিলগাঁও থানাধীন ডিএসসিসির ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোর মধ্যে ইদারকান্দি, ফকিরখালি, দাসেরকান্দি, গজাইরাপাড়া ও বাবুর জায়গা এলাকাগুলোর রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চলের অন্তত তিন কিলোমিটার রাস্তা তলিয়ে গেছে। ওয়ার্ডের ত্রিমোহনী, লায়নহাটি, নাগদারপাড়, নাসিরাবাদসহ অধিকাংশ এলাকার বাড়িতে পানি ঢুকেছে। ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডটিতে অন্তত দেড় শতাধিক বাড়ি ঘরে প্রবেশ করেছে পানি। এ ওয়ার্ডটির অভ্যন্তরীণ খালগুলো বালু নদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ। বালু নদ থেকে নড়াই নদী হয়ে অভ্যন্তরীণ সংযোগ খালের মাধ্যমে সহজেই ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চলে বানের পানি ছড়িয়ে পড়ে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডিএসসিসির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণগাঁও, ভাইগদিয়া ও মানিকদিয়া খালের তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। এদিকে ডিএসসিসির ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্ডা, কদমতলী ঝিলপাড়া ও উত্তর মান্ডা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে নগরীর সবুজবাগ, বাড্ডা, বেরাইদ, ডুমনি, সাতারক‚ল, দক্ষিণখান, টঙ্গী, গাজীপুর জেলার সদর উপজেলার প‚র্ব দিক ও দিয়ে কাপাশিয়া এবং কালিগঞ্জ উপজেলা এলাকার দিকে প্রবাহিত বালু নদের তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। তাছাড়া বালু নদ তীরবর্তী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় শাখা নদের সংযোগ ও ছোট বড় সংযোগ খালেও বানের পানি প্রবেশ করেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন্যার প্লাবিত হলেও অধিবাসীরা সরকারি কোনো সাহায্য পাচ্ছেন না।
৭৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আকবর হোসেন বলেন, বালু নদ তীরবর্তী এলাকাগুলোতে এ বছর বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক ঘরবাড়ি বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। আর বন্যাকবলিত মানুষগুলো করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে নতুনভাবে আবারও কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অর্থ কষ্টের মধ্যে খেয়ে না খেয়ে তারা দিনাতিপাত করছে।
ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলে বেড়িবাঁধ থাকলেও পূর্বাঞ্চলে বন্যা ঠেকানোর মতো বাঁধ বা অন্য কোনো অবকাঠামো নেই। প‚র্বাঞ্চলে বেশির ভাগ নিচু এলাকার জলাভ‚মি ভরাট করে আবাসিক এলাকা করা হয়েছে। ফলে পানি এসে সেই আবাসিক এলাকাগুলোকে প্লাবিত করবে সহজেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঢাকা ওয়াসা পানি নিষ্কাশনের জন্য পাঁচটি স্থানে পাম্প স্থাপন করলেও তা প‚র্বাংশের নিম্নাঞ্চলকে বন্যামুক্ত করতে পারবে না। গোড়ান, বনশ্রী, বাসাবো, আফতাবনগর, সাঁতারকুলসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় কমপক্ষে ৫০ লাখ মানুষের বসবাস। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের মধ্যবর্তী ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও ডিএনডি বাঁধ এলাকাতেও বন্যার পানি আসতে পারে। বিস্তীর্ণ এলাকায় একবার পানি ঢুকে পড়লে বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে রাজধানী ঢাকা।