ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ঘটনার নয়দিন পর শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম সাদিককে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ। আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই ওর্য়াড বয়কে পাঁচদিনের ছুটিতে রাখা হয়। গত রোববার অভিযুক্ত ওর্য়াড বয় হাসপাতালে ডিউটি করেছেন। স্থানীয়দের চাপের মুখে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ৩ সেপ্টেম্বর জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন ওই তরুণী। শরীরিক অবস্থা ভালো হওয়ায় গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে এক সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন ১২ সেপ্টেম্বর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ওই রাতের কোনো এক সময় এক যুবক তাকে ধর্ষণ করে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে পালিয়ে যান। পরে রাতেই তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে রেফার করেন কর্মরত চিকিৎসক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র স্টাফ নার্স বলেন, শুনেছি হাসপাতালে নাকি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তারপর থেকে ভয় পাচ্ছি। আমরা মেয়ে মানুষ রাতে অনেক সময় ডিউটি করতে হয়। কারণ অনেক ধরনের রোগীর সঙ্গে অপরিচিত মানুষ থাকে, কে কেমন তাতো আর জানি না। এখন অনেকে কানাঘুষা করছেন এ ঘটনার সঙ্গে নাকি আমাদের হাসপাতালের কোনো এক স্টাফ জড়িত। যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
এদিকে ভিকটিমের বাবার সঙ্গে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ বলেন, শুনেছি ওই রাতে হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন ডা. স্বপন কুমার সুর, নার্স দুলালী, সুমি আক্তার ও ওয়ার্ড বয় মাজেদুর রহমান।
ঘটনার নয়দিন পর কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভিকটিমের কাছ থেকে কোনো প্রকার অভিযোগ পাইনি, তবে লোক মুখে শোনার কারণেই আমি আমাদের একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম সাদিককে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। হয়তো দু’তিনদিনের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ধর্ষণের অভিযুক্ত ওর্য়াড বয়কে ঘটনার পর কেন পাঁচদিনের ছুটি দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি ডা. মামুনুর রশীদ।