৪র্থ দফার বন্যা কুড়িগ্রামে

৪র্থ দফার বন্যা কুড়িগ্রামে

কুড়িগ্রাম: অবিরাম বর্ষণ আর উজানের ঢলে ধরলা নদীর পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামে চতুর্থ দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। বাড়ছে তিস্তা ব্রহ্মপুত্রসহ অন্য নদ-নদীর পানিও।

এরই মধ্যে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে কুড়িগ্রাম শহরে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ১৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে (বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত)।

ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে ৪২ সেন্টিমিটার। ফলে ধরলার পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

অবিরাম ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রাম শহরে সৃষ্টি হয়েছে মারাত্মক জলাবদ্ধতা। কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল রোড, হাটিরপাড়, রৌমারী পাড়াসহ শহরের অন্তত ৩০টি পয়েন্টে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে নিমজ্জিত।

আকস্মিকভাবেই ধরলা নদীতে পানি বাড়ায় এর অববাহিকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার পরিবারের প্রায় ৪২ হাজার মানুষ। এছাড়াও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চতুর্থ দফা বন্যার কবলে শতাধিক হেক্টর আমন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে প্রলয়ংকরী ভাঙন। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০ মিটার অংশ ভেঙে ধরলা অববাহিকার ১০টিরও বেশি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।

তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই, চর বজরা ও কাশিমবাজার এলাকা। এখানে যোগাযোগের একমাত্র পাকা সড়কটির তিন মিটার তিস্তা গর্ভে চলে গেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম  জানান, উজানে অবিরাম বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২/৩ দিন পানি আরো বাড়তে পারে। নদীভাঙন রোধে বিভিন্ন এলাকায় জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান  জানান, ধরলা নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকার ১০০ হেক্টর আমন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, হঠাৎ করে ধরলা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বেড়েছে। পানি বাড়ায় আবার বন্যার কবলে পরেছে ধরলা তীরবর্তী এলাকার মানুষসহ বিভিন্ন ফসলাদি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য বলা হয়েছে।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন