ক্রীড়া প্রতিবেদক: সাফল্য আর উইকেট শিকারের ধারা ধরে রেখেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। পাশাপাশি পাকিস্তানী ফাহিম আশরাফের বোলিং তোপে পড়ে রংপুর রাইডার্সের কাছে রীতিমতো উড়ে গেল চট্টগ্রাম রয়্যালস। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সোমবারের প্রথম ম্যাচে লিটন-মালানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রামকে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে বিপিএলের এবারের আসর শুরু করল নুরুল হাসান সোহানের দল। ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০২ রান করে চট্টগ্রাম রয়্যালস। জবাবে ৩০ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে রংপুর রাইডার্স। সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কোনো চাপই নেয়নি রংপুর। ইনিংসের শুরুর দিকে দেখে-শুনে ব্যাট করেন দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও ডেভিড মালান। সময় গড়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামের বোলারর ওপর চড়াও হতে থাকেন তারা। আর হাঁকাতে থাকেন একের পর এক চার-ছক্কা। ফিফটির দিকেই এগোচ্ছিলেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। কিন্তু ৩ রানের আক্ষেপ থেকে যায় তার। ৩১ বলে ৪৭ রান করে আউট হন তিনি। পরের উইকেটে নেমে মাত্র ১ রান করতে পেরেছেন তাওহীদ হৃদয়।
লিটন না পারলেও ঠিকই ফিফটি তুলে নিয়েছেন মালান। কিন্তু জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তিনি। ৪৮ বলে ৫১ রান করে থামেন তিনি। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও খুশদিল শাহ মিলে জয় নিশ্চিত করেন। মাহমুদউল্লাহ ১ রানে ও খুশদিল ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে চট্টগ্রাম রয়্যালসকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। নাহিদ রানার করা ইনিংসের প্রথম বলেই সাজঘরের পথ ধরেন চট্টগ্রামের ইংলিশ ব্যাটার অ্যাডাম রশিংটন। আউট হওয়ার আগে করেন মাত্র ১ রান। দ্বিতীয় উইকেটে শুরুর চাপ সামলে নেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মির্জা বেগ। কিন্তু কেউই ব্যক্তিগত ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। ২৪ বলে ২০ রানে বেগ ও ২০ বলে ৩৯ রানে নাঈম আউট হন। এরপর ফাহিম আশরাফ ও মোস্তাফিজুর রহমানদের বোলিং তোপে মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারেননি কেউ।
শেষ আটজন ব্যাটারের দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পেরেছেন মাত্র একজন। ২১ বলে ১৩ রান করেন আবু হায়দার রনি। এছাড়া মাহমুদুল হাসান জয় ০, মাহফিজুল ইসলাম ১, মাসুদ গুরবাজ ৯, শেখ মেহেদী হাসান ১, তানভীর ইসলাম ৬, শরিফুল ইসলাম ৬ ও মুকিদুল ইসলাম ১ রান করেন। রংপুর রাইডার্সের সবচেয়ে সফল বোলার ফাহিম আশরাফ। একাই পাঁচটি উইকেট নেন তিনি। দুটি উইকেট নেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া একটি করে উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনজন বোলার। বিপিএলে ফাইফার তুলে নেওয়ার মাধ্যমে বিপিএলে মোট দুবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন ফাহিম আশরাফ। তার আগে দু’বার করে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন কেবল দুজন বোলার। একজন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। অন্যজন লঙ্কান বোলিং অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা। এদিকে সবার আগে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামি।
২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরেই এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। সেবারের ফ্র্যাঞ্চাইজি দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন সামি। আর প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন আল আমিন হোসেন। বিপিএলে এখন পর্যন্ত ফাইফারের দেখা মিলেছে মোট ২২ বার। এর মধ্যে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন ১৯ জন ভিন্ন বোলার। এই তালিকায় ১০ জন রয়েছেন বাংলাদেশি বোলার, বাকিরা বিদেশি। অন্যান্যবারের মতো প্রতি বছরই বিপিএলের মঞ্চে শক্তিশালী দল গঠন করে থাকে রংপুর। যদিও ২০১৭ সাল থেকে বিপিএল শিরোপা জিততে পারেনি তারা। তবে এবারের মৌসুমের শুরু থেকে বিদেশি খেলোয়াড়দের পাওয়ায় ভালো পারফরম্যান্স করার ইঙ্গিত দিয়ে রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান বলেন, ‘সবসময়ই বিদেশি খেলোয়াড়দের যাওয়া-আসা নিয়ে সমস্যা হয়ে থাকে। পুরো দল পাওয়া যায় না। এ বছর আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে একটি দল হিসেবে খেলার আশা করি।’
..