ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা: ইসি আনোয়ারুল

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা: ইসি আনোয়ারুল

নিউজ ডেস্ক: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন এবার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

তিনি বলেন, এবার আমরা এমন কোনো দিক রাখিনি যেখানে প্রস্তুতির ঘাটতি থাকবে। ভোটারদের জন্য নিরাপদ, উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ বন্দরের একটি রিসোর্টে ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের চ্যালেঞ্জ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন— ভোটারদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার জানান, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের জন্য নতুন বিষয় হলো একইদিনে গণভোট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে ভোটারদের মাঝে প্রাথমিকভাবে কিছু বিভ্রান্তি দেখা গেলেও ব্যাপক প্রচার ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

তিনি বলেন, আমরা রেডিও, টেলিভিশন, ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে বিস্তারিতভাবে প্রচার চালাচ্ছি। তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং সরকারও এই প্রচারণায় যুক্ত হচ্ছে। ফলে ভোটারদের কোনো অসুবিধা হবে না। ভোটারদের অভিজ্ঞতা সহজ করতে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ‘মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার ডেমো প্রদর্শন করেছে। এতে দেখানো হয়েছে—ব্যালট পেপার কীভাবে ছাপানো হবে, ভোটার কীভাবে লাইন ধরবে, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ থেকে ভোটদান– সব ধাপ, বুথের সামনে শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা এসব ডেমো দেখনো হচ্ছে।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবার পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থাকে নতুন করে বিস্তৃত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার।

তিনি বলেন, বিদেশে থাকা আমাদের প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে আইসিটির সহায়তায় নতুন পোস্টাল ব্যবস্থা চালু করেছি। কে কোন আসনে ভোট দিচ্ছেন— প্রতিদিন সেকেন্ডে সেকেন্ডে আমাদের ওয়েবসাইটে আপডেট দেখা যাচ্ছে। নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে আগেই ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং নির্বাচনের দিনই তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী এবার প্রিজাইডিং অফিসারকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। ফল ঘোষণার আগে ভোটগ্রহণে অন্তরায় সৃষ্টি হলে প্রিজাইডিং অফিসারই কেন্দ্র বন্ধের ক্ষমতা রাখবেন। রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজনে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতাও রাখবেন। পুলিশ অফিসারদেরকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হলফনামা গোপন বা ভুয়া তথ্য প্রদান করলেও ভোটে পাস করার পরেও পদ বাতিলের সুযোগ আইনেই নির্ধারিত রয়েছে।

নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য আমাদের কাছে চিঠি দিয়েছে। আমরা আইন-কানুন, বিধি-বিধানসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব মালামালও সম্পূর্ণ ক্রয় করা হয়েছে। এই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। শিডিউল ঘোষণার পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রমজানের আগেই, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ভোটারদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ২০২৬ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন— নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. হাসানুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. রায়হান কবির, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী, উপসচিব মো. মোস্তফা হাসান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী প্রমুখ।
সমাচার/এমএএন

 

..

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::