নিউজ ডেস্ক: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণার দিন সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা ১১ কার্যদিবস পতনের পর সিএসইতে মূল্যসূচক বাড়লো।
জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় পড়া শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। রায় পাড়ার কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়।
লেনদেনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় মূল্যসূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৬ পয়েন্ট কমে যায়। তবে বেলা ১১টার পর থেকে বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫টির। আর ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৭০টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৭টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৫টি কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৮৭টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫টির এবং ৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১টির দাম কমেছে এবং ১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪৮ কোটি ৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৮ কোটি ১০ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার। ১০ কোটি ৭২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রানার অটোমোবাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, লাভেলো আইসক্রিম, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার এবং মনোস্পুল বাংলাদেশ।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৫টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
..