একের পর এক ডাকাতিতে উদ্বিগ্ন ঈদগাঁওবাসী, বেপরোয়া ডাকাত সিন্ডিকেট

একের পর এক ডাকাতিতে উদ্বিগ্ন ঈদগাঁওবাসী, বেপরোয়া ডাকাত সিন্ডিকেট

 

আনাছুল হক, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের নতুন উপজেলা ঈদগাঁও যেন ক্রমে ডাকাতদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হচ্ছে। গত কয়েক মাসে একের পর এক সশস্ত্র ডাকাতি, গরু লুট, দোকানপাটে হামলা ও বাড়িঘরে তাণ্ডবের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এতসব ঘটনার পরও কোনো বড় ডাকাতচক্রকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে এই উপজেলায়।
ইসলামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নাপিতখালী, জালালাবাদ ইউনিয়নের ছাতিপাড়া, পূর্ব হাজীপাড়া, তেতুলতলী বাজার, মাছুয়াখালী, মাইজপাড়া কিংবা সাতঘরিয়াপাড়া। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই ডাকাতি বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে। স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা, গরু, এমনকি নির্মাণ সামগ্রী পর্যন্ত লুট হচ্ছে নিয়মিত।

সর্বশেষ গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত ৪টার দিকে উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ছাতিপাড়া গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।

উল্লেখ্য বিস্ময়ের বিষয়, এসব ঘটনার কয়েকটি ঘটেছে থানার এক কিলোমিটারের মধ্যে।
তবুও পুলিশের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
ইউপি সদস্য কামাল হোসেনের দাবি— ডাকাতির খবর দিলেও পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়নি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশের ভেতরে ‘তথ্য ফাঁসকারীদের’ কারণে অভিযানের খবর আগেভাগে ডাকাতদের কানে পৌঁছে যায়। ফলে অভিযান ব্যর্থ হয়, আর জনমনে জন্ম নিচ্ছে পুলিশের প্রতি অনাস্থা।
একজন ক্ষুব্ধ বাসিন্দা বললেন, “চিহ্নিত অপরাধীরা এলাকায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ শুধু মামলা নেয়, কিন্তু কাউকে গ্রেপ্তার করে না।”

ভুক্তভোগীদের দাবি, ডাকাতদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে। পুলিশের এই দুর্বলতা কাজে লাগিয়েই অপরাধীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

“প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ডাকাতি হচ্ছে। রাতে ঘুমানো দায় হয়ে গেছে,” এমন অভিব্যক্তি এখন ঈদগাঁওবাসীর মুখে মুখে।
নতুন উপজেলা হওয়ার পর থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মছিউর রহমান বলেন,
“আমরা কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই এবং তদন্ত করি। ডাকাতি-ছিনতাইরোধে টহল জোরদার করা হয়েছে। কয়েকটি ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জনগণ সহযোগিতা করলে দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::