হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে চবি’র তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ: একজনের মরদেহ উদ্ধার

হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে চবি’র তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ: একজনের মরদেহ উদ্ধার

 

আনাছুল হক, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্রসৈকতে গোসল করতে নেমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের তিন শিক্ষার্থী সাগরের ঢেউয়ে ভেসে যান। ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় শাবাব নামে একজন শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অপর দুই শিক্ষার্থী—অরিত্র ও আদিব।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে। নিহত ও নিখোঁজ তিনজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁরা ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে হিমছড়ি মূল সৈকতের পাশের একটি তুলনামূলক ফাঁকা অংশে পাঁচজন শিক্ষার্থী গোসলে নামেন। গোসলের কিছুক্ষণের মধ্যেই সমুদ্রের প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে তিনজন গভীর পানিতে তলিয়ে যান। বাকিরা সাঁতরে তীরে ফিরতে সক্ষম হলেও নিখোঁজরা আর ফিরে আসেননি।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় পর্যটন পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল যোগ দেয়। প্রায় চার ঘণ্টা তল্লাশির পর বিকেলে সৈকতের পাশ থেকে শাবাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার ইউনিট প্রধান জানান, প্রবল স্রোত, উচ্চ জোয়ার এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর সন্ধানে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং বুধবার সকাল থেকে পুনরায় অভিযান শুরু হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম জানিয়েছে, নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
হঠাৎ এই মর্মান্তিক ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত শাবাবের সহপাঠীরা সামাজিক মাধ্যমে আবেগঘন বার্তা দিচ্ছেন এবং নিখোঁজদের দ্রুত উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে আছি।”

স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানায়, হিমছড়ি ও আশপাশের সৈকত অংশগুলোতে কিছু জায়গায় গোসল নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পর্যটকরা অসচেতনভাবে পানিতে নামেন। পর্যাপ্ত সংখ্যক লাইফগার্ড না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::