নাজমুল হুদা : সৈয়দপুর ( নীলফামারী ) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিয়ের মেহেদীর রং না মুছতেই লাশ হতে হয়েছে নববধূ মোছা. মুক্তাকে (২৪) গত রবিবার (৫ জানুয়ারি) ভোরে তাঁর শ্বশুর বাড়ির নিজের শয়নকক্ষ থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এঘটনায় নিহতের স্বামী রানাকে (২৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে সে।
এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দপুর শহরের পশ্চিম কুন্দল এলাকার মৃত. মোস্তফা কামালের মেয়ে মুক্তা। সে (মুক্তা) শহরের একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। গত ১৫ দিন আগে শহরের কাজীপাড়া মৃত. বাবুল ইসলামের ছেলে মো. রানার (২৬) সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকেই রানার অসদাচরণের কারণে স্ত্রী মুক্তার বনিবনা হচ্ছিল না।
বিভিন্ন অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করায় তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। ফলে সবসময় তাঁর ওপর নির্যাতন করতে থাকে স্বামী রানা। ঘটনার দিন শনিবার (০৪ জানুয়ারি) রাতেও মুক্তার মাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন রানার বাড়িতে গিয়ে তাদের মধ্যে কলহ মিটিয়ে আসেন। কিন্তু স্বামী রানা আবারও মুক্তার সাথে ঝগড়া শুরু করে।
এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। এরপর নিজের শয়নকক্ষের ঘুমিয়ে পড়েন নববধূ মুক্তা। গভীর রাতে মুক্তার চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে তিনতলা বাড়ীর নীচতলার শয়নকক্ষে তাকে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পান শ্বশুরবাড়ির পরিবারের লোকজন। ভোর চারটার দিকে খবর পেয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন ও পরিদর্শক (তদন্ত) আকতার হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
পরে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ থানায় নিয়ে আসেন। ওইদিন ভোরেই বাড়ীর তিনতলার ছাদ থেকে নিহত মুক্তার স্বামী রানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রবিবার নিহত মুক্তা বেগমের বড় ভাই বাদী হয়ে বোন জামাতা রানাকে আসামী করে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
মুক্তার বড় ভাই মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, তাঁর বোনকে বোন জামাই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি তাঁর বোনের হত্যাকারী রানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। অভিযোগ রয়েছে রানার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। বদমেজাজসহ নানা কারণে তার আগের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়।
সৈয়দপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আকতার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা তার স্ত্রী মুক্তাকে গলাটিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।