কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ

কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি : পর্যটন শহর কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে শহরের ইউনি রিসোর্ট হোটেলে সমন্বয়কদের ‘সমঝোতা’ বৈঠকে এই হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সূত্রপাত হয়। বৈঠকে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং সমন্বয়কদের থানায় ডেকে নিয়ে যায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুইটি গ্রুপ সক্রিয় ছিল, যার ফলে মাঝে মাঝেই উত্তেজনার সৃষ্টি হতো। এই উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার লক্ষ্যে কক্সবাজারের ইউনি রিসোর্ট হোটেলে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম সমন্বয়ক খাঁন তালাত মাহমুদ রাফি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যিনি চট্টগ্রাম থেকে আসা ছাত্র প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠক চলাকালে কক্সবাজারের অন্যতম সমন্বয়ক রিয়াদ মনির অশালীন আচরণ ও গালাগালের কারণে উত্তেজনা তৈরি হয়। সমন্বয়কদের বিবদমান দুইটি গ্রুপের মধ্যে এই ঘটনায় হাতাহাতি শুরু হয়। হোটেলের বাইরে গিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং এসময় রিয়াদ মনিকে মারধর করা হয়।
কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল হাসান জানান, সংঘর্ষের খবর পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল করিম নোমানের নেতৃত্বে পুলিশ বিবদমান সমন্বয়কদের থানায় নিয়ে পরিস্থিতি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, বৈঠকে কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম থেকে আসা প্রায় ৪০ জন ছাত্র সমন্বয়ক উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন শহিদুল ওয়াহেদ শাহেদ, রবিউল করিম, ও শাহেদ মোহাম্মদ লাদেন। বৈঠকটি মূলত গ্রুপিংয়ের উত্তেজনা মিটিয়ে সমন্বয়কদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আহ্বান করা হলেও, রিয়াদ মনিরের অশালীন মন্তব্যের কারণে তা সংঘর্ষে পরিণত হয়।
বিবাদমান দুই পক্ষকে শান্ত করার জন্য ওসি ফয়জুল করিম নোমান বৈঠকের সমন্বয়কদের থানায় বসে বিষয়টির সমাধান করার প্রস্তাব দেন। এরই মধ্যে কক্সবাজার মডেল থানায় সমন্বয়কদের বিরোধ মীমাংসার জন্য পুলিশের চেষ্টা চলছিল। তবে বৈঠকের শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে কিনা, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এই ঘটনার পর কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ফয়জুল করিম নোমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তার মোবাইল ফোনটি একজন সহকারী রিসিভ করেন এবং জানান, ওসি নোমান ভেতরে ব্যস্ত আছেন এবং পরে ফোন করবেন।
সচেতন মহল বলছে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে চলমান গ্রুপিংয়ের উত্তেজনা ও সংঘর্ষ কক্সবাজারের শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি আরও বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নেয়নি, তবে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে সমন্বয়কদের মধ্যে সুস্পষ্ট সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::