নিউজ ডেস্ক : নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে বঙ্গভবনে ডাকা হয়েছে।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে আলোচনা করতে এ বৈঠকে একাধিক বিশিষ্টজনকেও ডাকা হয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টা পদে প্রস্তাবের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।এই মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা পদে ড. ইউনূসকে নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে দেশে ঐক্য প্রয়োজন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেই ঐক্য ফিরিয়ে আনতে পারেন। পাশাপাশি তার আন্তর্জাতিক পরিচিতি তিনি দেশের কাজে লাগাতে পারেন।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তাবে সায় দিয়ে ড. ইউনূস বিবিসিকে বলেন, ‘যে শিক্ষার্থীরা এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তারা যখন এ কঠিন সময়ে আমাকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করলেন, আমি কীভাবে তা প্রত্যাখ্যান করি?’জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে তিনি এগিয়ে আসতে চাইছেন। বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণ তার পাশে থাকবেন বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান তার ইউটিউব চ্যানেলে এক আলোচনায় বলেন, এটি জরুরি একটি সিদ্ধান্ত। আমি বিশ্বাস করি এ দেশকে খুব সুন্দরভাবে সার্ভ করার জন্য যথেষ্ট শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা তার আছে। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের সামনে এমন একজন মানুষের থাকা দরকার যিনি ঐক্যের প্রতীক হবেন। ড. ইউনূস এটি চমৎকারভাবে করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।ড. ইউনূস তার আন্তর্জাতিক পরিচিতিকে দেশের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন উল্লেখ করে এ বিশ্লেষক বলেন, তিনি যখন এ দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন, আমরা যেন তার পেছনে খুব শক্তভাবে দাঁড়াই।মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোররাতে এক ভিডিওতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তিনি বিদ্যমান সংকটে ছাত্র–জনতার আহ্বানে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এই গুরুদায়িত্ব নিতে সম্মত হয়েছেন।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সোমবার দুপুরের দিকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন। এরপর তিনি বাংলাদেশ ছাড়েন। পরে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার কথা জানান। পরে রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, জরুরিভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব দল ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।