প্রণব কুমার সাহা(মাদারীপুর প্রতিনিধি): তিনমাস ধরে মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার না থাকায় দলিল করতে পারছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা। এতে প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়ায় খরচের সঙ্গে বেড়েছে লাগামহীন ভোগান্তি। অন্যদিকে জমি বিক্রির অর্থ না পাওয়ায় অনেকের আটকে আছে বিদেশযাত্রা, রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসহ নানা জটিলতা। এতে স্থানীয় সেবাপ্রত্যাশীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলায় তিন মাস ধরে জমি রেজিস্ট্রি হচ্ছে না। অফিসে নেই দাতা-গ্রহীতার আনাগোনা। অধিকাংশ সময় খালি পড়ে থাকে চেয়ার-টেবিল। এমন চিত্র মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসের। নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে সদর উপজেলায় সাব-রেজিস্টার অন্যত্র চলে যান। পরে সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য শিবচর উপজেলার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেটিও অনিয়মিত। এতে বার বার অফিসে আসা-যাওয়ায় অর্থের অপচয়ের সঙ্গে বেড়েছে সেবাপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি।
সাব-রেজিস্টার অফিস সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ে সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসে মাসে ৮০০ থেকে একহাজার দলিল রেজিস্ট্রি হয়। এতে মাসে ৫-৭ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে সরকার। এই অফিসের আয়ের শতকরা তিন টাকা চলে যায় জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে। সেই অর্থ দিয়ে বছরব্যাপী করা হয় নানান উন্ননয়মূলক কর্মকাণ্ড। সেটিও আটকে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
সদর উপজেলার পাঁচখোলার বাসিন্দা ফিরোজ খান বলেন, দলিল করতে এসে দেখি কোন কর্মকর্তা নাই। কয়েকবার এসেও দলিল করতে পারি নাই। ভোগান্তি হচ্ছে, অফিসার ছাড়া অফিস অচল।
মিঠাপুর থেকে আসা মিজানুর রহমান বলেন, এখানে সকাল ১০টার সময় এসে বসে আছি। এখন বলতেছে সাব-রেজিস্টার নাই। সপ্তাহে ২-৩ দিন নয় নিয়মিত অফিসার দিলে এখানকার ভোগান্তি কমবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. দিদার হোসেন জানান, নিয়মিত সাব-রেজিস্টারের মাধ্যমে দলিল করতে না পারায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। যদি নিয়মিত অফিসার পাওয়া যায়, তাহলে কাজের গতি বাড়বে। মানুষের ভোগান্তি থাকবে না।
মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিসের অফিস সহকারী মো. আলী মিয়া জানান, নতুন অফিসার দেয়ার ব্যাপারে একাধিকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও মিলছে না সমাধান। স্থায়ীভাবে একজন কর্মকর্তা ছাড়া অফিস চালানো মুশকিল। তাই দ্রুতই সাব-রেজিস্টার দরকার।
মাদারীপুর জেলা রেজিস্টার মুনিরুল হাসান বলেন, সদর উপজেলা সাব-রেজিস্টার নিয়োগ দেয়ার জন্য ঢাকার প্রধান অফিসকে বলা হয়েছে। আশা করছি, চলতি মাসের মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে। এতে জনগণের দুর্ভোগ থাকবে না।