জামায়াত নিয়ে কঠোর অবস্থানে সরকার

জামায়াত নিয়ে কঠোর অবস্থানে সরকার

অনলাইন ডেস্ক: ভোট ও দলের স্বার্থে নানা সময়ে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের ধরন বদল হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপির সঙ্গে মজবুত সম্পর্কে কিছুটা ভাটা দেখা দেয়। প্রায় এক দশক পর সরকারের অনুমতি নিয়ে রাজধানীতে জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়। তবে এক মাসের ব্যবধানেই জামায়াতের প্রতি সরকারের কঠোর অবস্থানের আভাস মিলেছে।জামায়াত গত মাসে রাজধানীতে সমাবেশের সুযোগ পেয়ে বাইরে বিভিন্ন জেলায়ও সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই সরকার অনেকটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। সিলেটে রেজিস্টারি মাঠে গতকাল শনিবার সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ৫ জুলাই আবেদন করেছিল জামায়াত। অনুমতি না পেয়ে সমাবেশের তারিখ পিছিয়ে ২১ জুলাই নির্ধারণ করে আবার অনুমতি চেয়েছে তারা। ২২ জুলাই চট্টগ্রামে জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়েও পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।সিলেটে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ এক অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।তবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, জামায়াতের বিষয়ে তাঁদের দলীয় অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধীর দল, একাত্তরের ঘাতক; তাদের কীভাবে আমরা সমর্থন করব? তাদের প্রতি আমাদের চিন্তা বা অবস্থানের পরিবর্তন কেন হবে? কোনো কারণ নেই।’ তিনি আরও বলেন, কেন তাদের ঢাকায় জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং এখন আবার সিলেটে অনুমোদন দেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই ভালো বলতে পারবেন।সরকারের সঙ্গে জামায়াতের সমঝোতা আছে কি না জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সরকারের কোনো সমঝোতা নেই।’বিএনপির সঙ্গেও অনেক দিন ধরে সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছিল না জামায়াতের। এ নিয়ে দুপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করে আসছিল। গতকাল ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াত নেতা সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে এক জোটেই ছিলাম বহুদিন। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনও করেছি, একসঙ্গে আমরা সরকারেও ছিলাম। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গেই ছিলাম। বিএনপি যখন ১০ দফা দিয়েছে, আমরাও ১০ দফা দিয়েছিলাম। এই ১০ দফা ঘোষণার পরে আমাদের আমিরকে গ্রেপ্তার করা হলো। আমরা প্রতিবাদ করে মিছিল করলাম, মিছিলে পুলিশ হামলা করল। আমরা আশা করেছিলাম, জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারা (বিএনপি) অন্তত একটা বিবৃতি দেবে। কিন্তু সে কাজটা তারা করেনি। এতে করে আমাদের কর্মীরা আহত হয়েছেন।’

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::