বাঁধ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরিতে রুল হাইকোর্টে

বাঁধ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরিতে রুল হাইকোর্টে

নিউজ ডেস্ক :  নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরিতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।আদালতে শুনানি করেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী শহীদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।  পরে শহীদুল ইসলাম জানান, রিটে গত এক বছরের বড় বড় নদী নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ২২টি প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে।  ওইসব প্রতিবেদনে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোথাও জিও ব্যাগ ফেলে, কোথাও ব্লক, আবার কোথাও মাটি ফেলে নদীর তীর ও বাঁধ ভেঙে যাওয়াকে রোধ করার চেষ্টা করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এই সংস্থার কাছে নদী অববাহিকার কোনো পরিকল্পনা নেই।তিনি জানান, রুলে বাংলাদেশের প্রতিটি বড় নদীর পানির গতিপথ, নদীর বাস্তুসংস্থান ও নদীর ভূরুপ তত্ত্ব বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি বড় নদীর জন্য নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং বাঁধ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরির জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।চার সপ্তাহের মধ্যে পানি সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি, পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার ডিজি ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।   একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘জোয়ারে তলায় বাড়িঘর, রাস্তায় কষ্টের জীবন’ শীর্ষক প্রতিবেদন বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় এলাকায় অধিক উচ্চতার জোয়ার হয়েছিল গত ২৬ মে। এরপর কেটে গেছে তিন মাসের বেশি সময়। কিন্তু এখনো ইয়াসের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন গাতির ঘেরি গ্রামের মানুষ। ওই গ্রামের শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে পাশের হরিহরপুর গ্রামের ইটের রাস্তার ওপর। রাস্তা ও বাঁধের ওপর মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।ইয়াসের প্রভাবে অধিক উচ্চতার জোয়ারে কয়রার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ১২টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় ৪০টি গ্রাম। এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মহারাজপুর, মহেশ্বারীপুর, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হলেও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির ঘেরির বাঁধটি মেরামত হয়নি। ভাঙা বাঁধ দিয়েই জোয়ারের পানি ঢুকে দিনে দুবার ডুবছে গাতির ঘেরির গ্রাম।উপজেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, ইয়াসের প্রভাবে কয়রায় বিধ্বস্ত হয়েছে ১ হাজার ২৫০টি ঘর। তলিয়ে যায় ২ হাজার ৫শ’টি চিংড়িঘের, এর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ১৫ হেক্টর জমির কৃষি ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় একটি নৌকা নিয়ে যাওয়া হয় বাঁধ ভাঙার স্থানে।  দেখা যায়, ৫০ থেকে ৬০ মিটার ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকছে।‘মেঘনার ভাঙনে গৃহহীন ৫০ হাজার পরিবার’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মেঘনার ভাঙনের প্রভাব পড়েছে লক্ষ্মীপুর উপকূলীয় অঞ্চলে। নদীর অব্যাহত ভাঙনে এখানকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ এখন গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ আর বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে ভাঙাচোরা ঝুপড়িতে এখন বাস করছেন তারা। কারও ঘরে টিন, কারও পলিথিনের ছাউনিতে জরাজীর্ণ ঘরে দুর্ভোগে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়ার আকুতি এসব অসহায় মানুষের। সরকারি-বেসরকারি সীমিত বরাদ্দে নদীভাঙা এসব পরিবারের সান্ত্বনা যেন মিলছেই না।  জেলা প্রশাসক বলছেন, নদীভাঙাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর দেওয়া হচ্ছে।  কোনো গৃহহীন থাকবে না বলে আশ্বাস দেন তিনি।জানা যায়, কিছুদিন আগেও লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট ও চরলরেন্স এলাকার নদীতীরে বাস করত শতাধিক পরিবার। ছিল ঘরবাড়ি, পুকুর ও ফসলি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা। কিন্তু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে এখন এসব শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে বাসিন্দাদের মনে। এ জেলায় মেঘনার অব্যাহত ভাঙন তাণ্ডব প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসছে বলে জানান স্থানীয়রা।  বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে। এ দুই এলাকাই নয়, এ ভাঙনের প্রভাব পড়েছে লক্ষ্মীপুরের সদর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী এলাকায়। বিশেষ করে ভাঙনের তীব্রতা ছিল রামগতি ও কমলনগরে ব্যাপক। এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনার পাশাপাশি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বহু মানুষের ভিটাবাড়ি ও ফসলি জমি।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

ঈদগাঁও–ঈদগড় সড়কে গুম ও ডাকাতি দমনে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি

শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি