রোববার (১ মে) দুপুর ১২টা ২ মিনিটে প্রয়াত মুহিতের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে করে শহীদ মিনারে আনার পর সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধার মাধ্যমে তাকে বিদায় জানান।
প্রথমেই সিলেট মহানগর পুলিশের একটি চৌকস দল ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এরপর প্রয়াতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, এর আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন, মুহিবুর রহমান মানিক এমপি, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি, হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরহুমের রুহের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহম।
দুপুর ২টায় নগরীর ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
নগরীর রায়নগরে স্থানীয়ভাবে ডেপুটি বাড়ি বা সাহেববাড়ি হিসেবে পরিচিত পৈত্রিক বাড়ি সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ও বাবা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের কবরের পাশেই তাকে দাফন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ নামাজের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজারো মানুষ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমবেত হয়েছেন।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) রাতে ঢাকা থেকে সড়কপথে প্রয়াত মুহিতের মরদেহ সিলেটে আনা হয়। সেখানে মরদেহ গ্রহণ করেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। সেখানে আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাকে শেষবারের মত দেখেন।
দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুহিতের মৃত্যুতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ দুইদিনের শোক পালন করছে।
এজন্য দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতাকর্মীরা কালোব্যাজ ধারণ করছেন।
ঈদুল ফিতরের পরের দিন হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করবে সিলেট আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মুহিত।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ (সদর-নগর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। এই সময়ে তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দেশের সবচেয়ে বেশিবার বাজেট প্রণয়নের রেকর্ড গড়েন। ‘আলোকিত সিলেট’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর নেন।