দু’বছর পর মঙ্গল শোভাযাত্রা

দু’বছর পর মঙ্গল শোভাযাত্রা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: সময়ের আবর্তনে বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে বাংলা নববর্ষ উদযাপন। পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুন বছর বরণ করে নেয় উৎসবপ্রিয় বাঙালি।প্রতিবছর বর্ষবরণে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বের করা হত মঙ্গল শোভাযাত্রা। তবে করোনার কারণে গত দু’বছর সেখানে ছন্দপতন ঘটে। আগামীতে যেন নেতিবাচক পরিস্থিতির আগমন না ঘটে সেই প্রত্যাশা সবার।বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সর্বস্তরের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠিত হল মঙ্গল শোভাযাত্রা।
এবার মেট্রোরেলের কারণে এবার চারুকলা অনুষদের পরিবর্তে শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রার নির্ধারিত সময় ৯ টা বাজার আগেই সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণের জন্য টিএসসিতে জমায়েত হতে থাকে। বৈশাখের রঙ্গে রঙ্গিন মানুষের পদভারে ভরে ওঠে পুরো এলাকা। সবাই বৈশাখের বিচিত্র সাজে নিজেদেরকে রাঙিয়েছেন। মুখে রং তুলিতে লেখা ‘শুভ নববর্ষ ১৪২৯’, এসো হে বৈশাখ। ছেলেরা লাল-সাদা পাঞ্জাবি, মেয়েরা বৈশাখী শাড়ি পরিধান করেছেন। অনেকে মাথায় গামছা, আর লুঙ্গি পরে নিজেকে পুরো বাঙালিয়ানা সাজে সাজিয়েছেন। ছোট শিশুরাও অভিভাবকদের সাথে বৈশাখ উদযাপনে যোগ দিয়েছে। বাঁশি, একতারা, খেলনার ঢোল হাতে নিয়ে উল্লাস করেছেন। শোভাযাত্রায় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রতিকৃতিগুলো ঘোড়া, মাছ, পাখি, টেপা পুতুল ও বিভিন্ন ধরনের মুখোশ হাতে অংশ নেন অনেকে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেম গোলাম রব্বানী ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেনের নেতৃতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এতে অংশ নেন।

শোভাযাত্রার নিরাপত্তা রক্ষায় বিশেষভাবে তৎপর  ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শোভাযাত্রার সম্মুখভাগে র‌্যাব, পুলিশ, সোয়াট, বিএনসিসির সদস্যরা নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়। শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন চত্বর ঘুরে এসে টিএসসিতে শেষ হয়।মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, এবারের প্রতিপাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনেকটা প্রার্থনা সঙ্গীতের একটি অংশ। সেটি হল- ‘নির্মল কর, মঙ্গল কর মলিন মর্ম মুছায়ে’। গানটির এই লাইন থেকে আমরা শুধু প্রথমের ‘তুমি’ শব্দটা বাদ দিয়েছি। ” আমাদের স্বাভাবিক জীবনের যে ছন্দপতন ঘটেছে, যত নেতিবাচক পরিস্থিতি এসেছে সেখান থেকে যেন আমাদের মুক্তি হয়। একইসঙ্গে আগামীর দিনগুলো যেন মঙ্গলময় হয়। সেরকমটা চাই।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন