বিস্ফোরণে কাঁপছে কিয়েভ: বিবিসি

বিস্ফোরণে কাঁপছে কিয়েভ: বিবিসি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। গোলাগুলির সময় কিয়েভের কাছে ধোঁয়া এবং আগুনের শিখা দেখা গেছে।ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র হামলা ও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে দেশটির দক্ষিণ, পূর্ব এবং উত্তরের প্রধান শহরগুলোর চারপাশে যুদ্ধ চলছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রুশ সেনারা চেষ্টা করছে রাজধানী কিয়েভ পুরোপুরি দখলে নেওয়ার। এরপর তারা দেশটির নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবে।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কিয়েভের মাইডান স্কয়ারের কাছে একটি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এছাড়া শহরের ত্রয়েশ্চিনা এলাকায় পাওয়া গেছে একাধিক বিস্ফোরণের খবর। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলার শব্দ এত তীব্র ছিল যে শহরের কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত শব্দ পেয়েছেন তারা।কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, শহরের চিড়িয়াখানার কাছে এবং শুলিয়াভকা শহরের আশপাশে ৫০টিরও বেশি বিস্ফোরণ এবং ভারি মেশিনগানে গোলাগুলি হয়েছে।ইউক্রেনীয় স্টেট স্পেশাল সার্ভিসের মতে, রাজধানীর ট্রয়েসচিনা এলাকার সিএইচপি-৬ পাওয়ার স্টেশনের কাছে তীব্র লড়াই চলছে। এই হামলার মাধ্যমে পুরো শহরটিকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম কিয়েভের পেরেমোহি অ্যাভিনিউতে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে।এছাড়া ভাসিলকিভের একটি বিমান ঘাঁটির কাছে পাওয়া গেছে তীব্র লড়াইয়ের খবর। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ান প্যারাট্রুপাররা কিয়েভের ওপর হামলা চালানোর জন্য এই ঘাঁটিকে তাদের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করবে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী দাবি করছে, তারা কৃষ্ণ সাগরের শহর মাইকোলাইভে থেকে রুশ সেনাদের সফলভাবে হটিয়ে দিয়েছে।ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানায়, কিয়েভের একটি সেনা ঘাঁটিতে রুশ সেনারা আক্রমণের চেষ্টা করলে তারা এর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।অন্যদিকে রুশ সেনাদের ব্যারাকে ফিরে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পরপরই তার মন্তব্য, ইউক্রেনে আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া।জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতার কারণে এই খসড়া প্রস্তাবটি ব্যর্থ হয়ে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে অ্যান্তনিও গুতেরেস লেখেন, জাতিসংঘের জন্ম হয়েছিল যুদ্ধাবস্থায়। যুদ্ধের অবসান ঘটাতে। আজ সেই উদ্দেশ্য অর্জিত হয়নি। কিন্তু আমাদের হাল ছাড়লে চলবে না। শান্তিকে আরেকটি সুযোগ দিতে হবে। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি ইউক্রেনে হামলা চালানো রুশ সেনাদের তাদের ব্যারাকে ফিরে যেতে বলেন।রাশিয়ায় জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যারা খসড়া সমর্থন করেননি, তাদের প্রস্তাবকে ‘রুশ-বিরোধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। নিরাপত্তা পরিষদের ১১ সদস্য দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদান থেকে বিরত থাকে চীন, ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কিয়েভে লড়াই প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেন। তিনি ইউক্রেনীয়দের সতর্ক করে বলেন, তারা কোনো অবস্থায় রাজধানীর দখল হারাবেন না। এজন্য খুব কঠিন এক রাতের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ইইউ প্রথমবারের মতো সরাসরি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এছাড়া আরও অনেক দেশ রাশিয়ার বাণিজ্যিক এয়ারলাইনস এবং ব্যক্তিগত জেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন