সাধন চন্দ্র মণ্ডল : বদরুন্নেছা কলেজের এক ছাত্রী ‘ঠিকানা পরিবহনে’ কলেজে আসার পথে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে বাসের হেলপার অভদ্র ব্যবহার করেন এবং এক পর্যায়ে মেয়েটিকে ধর্ষনের হুমকি দেয়। প্রকাশ্য দিবালোকে জনসমক্ষে একজন হেলপার একটি মেয়েকে ধর্ষনের হুমকি দিয়ে নির্বিঘেœ চলে যাবে এটা ভাবতে বড় কষ্ট লাগে। বাসভর্তি যাত্রী প্রতিবাদ করতে ভুলে যেয়ে মুখ লুকায়ে নিজেদের লজ্জা ঢাকলো।
কোন যাত্রীকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, কেননা প্রতিবাদ করে বিড়ম্বনায় পড়তে কে চায় ? দেখা যাবে প্রতিবাদকারীর পিছনে কেউ নাই। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে ইচ্ছে করেÑএ লজ্জা কোন ব্যক্তির নয় বরং এ লজ্জা পুরো দেশবাসীর ,জাতির ও রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র কোন দায় এড়াতে পারে না। একইভাবে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী সরকারও দায় এড়াতে পারে না। তদুপরি শিক্ষামন্ত্রী নিরব আর প্রধানমন্ত্রী অবহিত নন।
হরহামেশাই বাসের হেলপাররা যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, ইতরের মতো আচরণ করে। ১০ টাকার ভাড়ার স্থলে ৫০ টাকা দিলে সে ভাড়া নিবে ২০ টাকা, এবং তার সপক্ষে যুক্তি না দিয়েই অন্যত্র সরে যাবে। এছাড়া কেউ ১০০ বা ৫০০ টাকার নোট দিলে সে আঙুলের ফাকে রেখে ফেরৎ টাকা পরে দিব বলে অন্যত্র চলে যায়। আপনি দু’একবার চাইলেও সে আমলে নিবে না। আপনি নেমে যাওয়ার শেষ সময়ে তাড়া হুড়ো করে দিবে। অর্থাৎ আপনাকে মানসিক অশান্তিতে রাখবে এটাই তাদের মজা বা প্রবনতা। এছাড়া আপনি ভুলে যান কিনা সে সুযোগ নেওয়াও তাদের অর্ন্তনিহিত উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
আপনাকে গন্তব্যের পূর্বেই নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে। মনে করেন আপনি শাহবাগ যাবেন, সিগনালে গাড়ী হয়তো শিশুপার্কে বা তারো পিছনে দাড়িয়েছে, হেলপার বলবে শাহবাগ এসে গেছে নেমে পড়ুন। মিথ্যা বলা এদের কাছে কোন ব্যাপারই না। কারণে বা অকারণে মিথ্যা বলা এদের অভ্যাস। নির্ধারিত ভাড়ার স্থলে ইচ্ছা করেই বেশী ভাড়া দাবী করে ; অনেকে না জেনে বেশি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। শতকরা ৯০ ভাগ এরকম অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছে বিনা বাঁধায়, বিনা প্রতিবাদে, বিনা বিচারে। এছাড়া কিছু কিছু হেলপারের জঘন্যতম আচরণ অপ্রকাশ থেকে যায়। তাদের নিজেদের একান্ত আলাচারিতায় উঠে আসা তথ্য থেকে জানা যায়, কম সচেতন সহজ সরল মেয়েদের বাসে তোলার সময় কৌশলে তাঁদের গায়ে হাত দেয়। মেয়েটি লজ্জায় মুখ খোলে না তাই হেলপারের আচরণ অপ্রকাশ্যই থেকে যায়। এই জঘন্য মনন ছোটবেলা থেকেই তাদের গড়ে ওঠে।
সম্প্রতি পরিবহন মালিক পক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে, ‘পরিবহন মালিকরা ৮০ শতাংশই গরীব”। কথাটার বাস্তব বিবরণ অনেকটা এইরূপ :
গ্রামের কিংবা বস্তির অশিক্ষিত বেকার বালক কারো সংগে শহরে এসে প্রথমে টেম্পোর হেলপার হয়, তারপর সার্ভিস বাসের হেলপার, শরীরের গঠন ভালো থাকলে একটু মাস্তানী করে নিজের অবস্থান শক্ত করে, ক্রমে সে ড্রাইভার হয়। এভাবেই সে গাড়ীর মালিক হয়, ক্রমে একাধিক গাড়ীর মালিক হয়ে কোটিপতি হয়ে যায়। আমার মনে হয় ড্রাইভার থেকে মালিক হয়েছেন তাঁদের অবস্থান জরিপ করলে অনেকটা প্রায় একইরকম তথ্য পাওয়া যাবে। অর্থাৎ সবাই শিক্ষাবিহীন, প্রশিক্ষণ বিহীন , অপ্রাপ্ত বয়সে শূন্য হাতে শহরে এসে কোটিপতি হয়েছে।
হেলপার ড্রাইভারদের শুধু দেখলেই হবে না তাঁদের গুণও আছে তবে তার সংখ্যা নগন্য তাই তাদের মূল্যায়ন হয় না। কম শিক্ষিত ও ভালো পরিবেশ না পাওয়া সত্তে¡ও তাঁদের মধ্যে মানবিক গুণ প্রকটভাবে বিদ্যমান। সাধারণ মানুষ একই পাল্লায় পরিমাপ করে তাঁদের গুণাবলীকে যথাযথ মূল্যায়ন করে না। ধানক্ষেতে মধ্যে যেমন অনেক আগাছা থাকে কিন্তু আমরা তাকে ধান ক্ষেতই বলি। ভালোদের গুণ সঞ্চারিত হোক সমাজ পরিবর্তনের জন্য যা একান্ত প্রয়োজন।
কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই একদিন পরিণত হবে। তখন তাদের কাছ থেকে দেশ ও জাতি অপার সম্ভাবনা পেতে চাইবে। তাদের মনোজগৎ গঠনে, পরিশুদ্ধ মনন সৃজনে আজকের পরিণত মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সর্বাধিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারী শিক্ষার উন্নয়নে বহু যুগান্তকারী ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিয়েছেন। যার ফল শুধু নারী জাগরণে বা সচেতনতায় নয়, এর সুফল সমাজ সংসারের প্রতিটি স্তরে পড়েছে এবং জাতীয় উন্নয়নে বিশেষ করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় দেশ ও জাতি অব্যাহত গতিতে এগিয়ে চলেছে। কিছু কুচক্রীর বিকৃত আচরণে সকল অর্জন মুহুর্তে ঋণাত্মক হয়ে যাবে তা কারোরই কাম্য নয়। চার চার বারের সফল প্রধানমন্ত্রীর অনেক মানবীয় গুণ দেখেছে দেশবাসী। নিমতলীর অগ্নিকান্ডে নিঃস্ব মেয়েটির পাশে মমতাময়ী মা হয়ে, পুরান ঢাকায় অগ্নিদগ্ধ পুত্রের মাতার আহাজারির পাশে সমব্যাথী হয়ে, গরীব মানুষের আবাসন চিন্তা একমাত্র তাঁর আত্মিক চেতনারই ফল এমন হাজারো মানবিক দায়বোধের নজির দেখে দেশবাসীর অন্তরের গভীরে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মানবিক কারণে অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে বিশ্ব দরবারে পেয়েছেন বিশ্ব মানবতার মা উপাধি। সেখানে বাসের হেলপারের এহেন আচরণ অত্যন্ত দুঃখের ও পরিতাপের।
যে মেয়েটি বাসে চড়ে কলেজে যায় নিশ্চয় সে উচ্চবৃত্ত নয়। ঢাকা শহরে মধ্যবৃত্ত শ্রেণীর মেয়েরা অধিকাংশ রিক্সায় স্কুল কলেজে যায় কিন্তু অধিকাংশ নিম্নবৃত্ত ঘরের মেয়েরা বাসে চড়ে কলেজে যায়। তাছাড়া ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে নিম্নবৃত্তরা কাছাকাছি বাসা নিতে পারে না। ফলে তাদের ছেলে মেয়েরা বাধ্য হয়েই বাসে যাতায়াত করে। অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনায় বাস ভাড়া হাফ করা অত্যন্ত যৌক্তিক। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ২০১৫ সালে ঢাকা শহরে ছাত্র ছাত্রীদের বাস ভাড়া অর্ধেক হবে বলে ঘোষনা দেন। শুধু তাই নয় যে পরিবহন হাফ ভাড়া নিবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের হুসিয়ারিও দেন। এরপর ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের সড়ক আন্দোলনে গোটা দেশ, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ চমকে ও থমকে উঠলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি গোচরে নেন। সেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ৯ টি দাবীর মধ্যে ১ টি ছিল হাফ ভাড়া মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রী একটি খসড়া ট্রাফিক আইন অনুমোদন করলেও সেখানে হাফ ভাড়ার বিষয়টি ছিল না। স্পর্শকাতর বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া বা করা জরুরী।
নীতি-নৈতিকতা ক্রমনিম্নমান গতি কোনক্রমেই রদ রহিত করা যাচ্ছে না। আমজনতা সে আশা ছেড়েই দিয়েছে। নীতি শিক্ষার গুরুত্ব সাধারণের মন থেকে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে এখন নীতি নির্ধারকের মনে আছে কিনা সন্দেহ। ছোট বেলায় যা পড়েছি এখন তা আর চোখে পড়ে না। যেমন নবীজির পথে কাঁটা দেয়া বুড়ীর গল্প, ওস্তাদের কদর, ঈমান ইত্যাদি গল্পগুলো শিশুমনে যেন গেঁথে আছে। যতদিন পার হয়েছে এর আদর্শগত দিকটা উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বতর হয়েছে। আজ এগুলো মনে হয় অচল। ডিজিটাল যুগে ছেলে মেয়েদের সময়োপযোগী চাহিদা ভিন্নতর। পারিবারিক অনুশাসন, সামাজিক বন্ধন , স্কুল, কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত সর্বত্র নিয়ম ভাঙার জোয়ার বইছে।
আমাদের দেশের বাসের হেলপার ও ড্রাইভারদের পারিবারিক অবস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বেড়ে ওঠার পথ ও পরিবেশ বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে যে, অধিকাংশ হেলপারের বাড়ীর অবস্থা ভালো না, তেমন কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্রতার চরম সংকটে অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। একটু বড় হলে বাসের হেলপারের সহযোগী হয়ে যায়। ধীরে ধীরে সে হেলপার হয়ে ওঠে। হেলপার হয়ে সে ড্রাইভারের নৈকট্য লাভ করে। ড্রাইভার তার দায়িত্বে আলস্য করে হেলপার দিয়ে গাড়ী প্লেস করায়। অনেক সময় শেষ স্টপেজে পৌঁছানোর পূর্বেই হেলপারের কাছে ড্রাইভ করতে দিয়ে ড্রাইভার কেটে পড়ে। এভাবেই হেলপার থেকে ড্রাইভার হয়েওঠে একজন লেখা পড়া না জানা ব্যক্তি। ড্রাইভার ও হেলপারের কর্ম পরিবেশ আরো ভয়াবহ। ড্রাইভার সিগারেট খায়, কোন স্টপেজে থামলে হেলপারকে ডাক দেয় মাঝে মধ্যে দু’একটা গালি দিয়ে ফেলে যা তাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়। তারপর বলে পান ও সিগারেট আন, সিগারেটটা ধরিয়ে আনিস্। যেন মওকা পেয়ে যায় হেলপার, সে সিগারেট ধরিয়ে দু’টান দিয়ে তারপর ড্রাইভারকে দেয়। যাত্রীদের কষ্ট বিবেচনা না করেই ড্রাইভার সিগারেট খেতে থাকে। এভাবেই ড্রাইভার হেলপারের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। দুপুরে খাওয়ার সময় ড্রাইভার হেলপার একসাথে খায় তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাত্রীদের থেকে আদায়কৃত ভাড়া থেকে বিল পরিশোধ করে হেলপার । রাতেও একই অবস্থা। সারাদিন গাড়ীতে চড়ে তাদের শরীর হিট হয়ে যায়। সেখানে খাদ্য তালিকায় কোমল খাবার থাকা বাঞ্জনীয় কিন্তু বিপরীত খাবারই তারা খায়। দিনশেষে যখন মালিকের কাছে টাকা জমা দিতে যায় তখন হেলপারই যায়। স্টাফের খোরাকি ও বেতন বাদে অবশিষ্ট অর্থ মালিককে দেয়। কোনদিন বেশি টাকা আদায় হলে সে অর্থ মালিকের পরিবর্তে তাদের পকেটে চলে যায়।
ড্রাইভার, হেলপার ও সহযোগী সম্মিলনে বর্তমান যে পরিবেশ তা বিশ্লেষণ করলে সেখানে নীতি-নৈতিকতা, মানবিক দৃষ্টিকোণ, শুদ্ধাচার ও শুভ চিন্তা বা আলোচনার কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। পক্ষান্তরে ক্লান্তি ভোলার অজুহাতে চটুল আলাপচারিতায় মগ্ন থাকা, ঠুনকো তালের গান নিয়ে, পর্ণগ্রাফির সাথে বাস্তব ছবি মিলায়ে রসসিক্ত গল্প বানানো ও উপভোগ করা , অনৈতিক পন্থায় কোন অর্জনকে বাহবা দেয়া প্রভৃতি নেতিবাচক কর্মকান্ডই আলাপে আবর্তিত হয়। আর চর্চায় উৎকর্ষতা বাড়ে। তাই ঋণাত্মক বিষয়াবলী যত আলোচিত হবে ততই দুষ্টবুদ্ধির বিকশিত হবে এবং শুভবুদ্ধি হ্রাস পাবে। তাই কর্মক্ষেত্র, কর্মপরিবেশ,বন্ধুমহল সর্বোপরি যাপিত জীবন তার মনন গঠনে গুরুত¦পূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সে পরিবেশ পরিবর্তনে কোন পক্ষের কোন উদ্যোগ আছে বলে মনে হয় না। বরং সমর্থন করে যাচ্ছে সকল মহল। যেমন হেলপারকে প্রশ্রয় দেয় ড্রাইভার। হেলপার যাই করুক না কেন ড্রাইভার তাতেই সায় দেয়। সায় দেয়া অনেক সময় কৌশলগত কিন্তু পরবর্তীতে হেলপারকে বুঝাতে হবে তার কাজটা অন্যায় ভবিষ্যতে যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যেহেতু ড্রাইভারই তার নিয়ন্তা সেহেতু ড্রাইভার কোন শিক্ষা দিলে হেলপার তা মনে প্রাণে গ্রহণ করবে এবং বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। কিন্তু কর্মকালীন শিক্ষা একেবারেই নাই। আবার ড্রাইভার তার উর্ধতন মালিক পক্ষ, ইউনিয়ন লিডার ও নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা কেউই ড্রাইভারের কোন অন্যায় নিয়ে কখনো কোন প্রশ্ন তোলে না। তাঁদের ধারনা কোন কিছু বলতে গেলেই সে বিগড়ে যাবে। অতএব সবাই তাকে সমর্থন করেই কথা বলেন। তাই ড্রাইভারের পরিবর্তনের কোন সুযোগ নাই। এভাবেই নির্বিঘেœ তাদের অভ্যাস গড়ে উঠেছে। দিনে দিনে তা লাগামহীন হয়ে উঠছে, আর তাদের ঊর্দ্বতনদের ধারণা ‘তাদেরকে পরিবর্তন করা যাবে না’ এটাই জনগণের মাঝে সঞ্চারিত হচ্ছে।
হেলপার, ড্রাইভার, শ্রমিক সংগঠন, নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ও সংস্থা চালনাকারী সবই যেন একই সুতোয় গাঁথা। তাদের সংগঠন এতোই শক্তিশালী যে শক্তি প্রদর্শনীতে বার বার তাদেরই জয় হয়েছে। তাই সাধারণ জনগণ ওদের কাছে অনেকটা জিম্মী। ফলে যত অসুবিধাই হোক না কেন সবকিছু অদৃষ্টের ওপর চাপিয়ে দিয়ে মেনে নেয়। বিলম্বিত বিচার বা বিচারহীনতাই সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। একযোগে শুদ্ধি অভিযান চালানো তথা শুদ্ধাচার প্রাকটিস করা প্রয়োজন। সরকার সেই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই সর্বস্তরে শুদ্ধাচার চালু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সুস্থ্য পরিবেশ সৃষ্টি করা সরকারের দায়িত্ব যার মধ্যে সকল নাগরিক সাবলীলভাবে বেড়ে ওঠবে। আবার জনগণ শুদ্ধ না হলে পরিচ্ছন্ন পরিবেশও গড়ে উঠবে না। পারিবারিক কারণে অনেকে পড়ালেখার সুযোগ পায় না , অল্প বয়সেই তাদেরকে জীবিকার সন্ধানে রাস্তায় নামতে হয়। কিন্তু অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে তো কোন বাঁধা নেই। তাই ভাল চিন্তা করে পরিবেশটাকে ভাল করার জন্য লেখা পড়া জানতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আত্মসমালোচনা ও আত্ম চিন্তা করে অনুস্মরণীয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে।
পরিশেষে ছোট একটা সুপারিশ অধিকাংশ নিঃস্ব পরিবার থেকে আসা হেলপার ড্রাইভারদেরকে সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সে প্রশিক্ষণে ট্রাফিক আইন শিখানোর পাশাপাশি নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর তাঁদের মধ্যে কিছুটা দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হবে। এবং ক্রমান্বয়ে তাদের আচরণে পরিবর্তন আসবে। তখন হয়তো আমরা হেলপারের মুখে এমন জঘন্য বক্তব্য থেকে রেহাই পাবো। মানুষ আশা নিয়ে বেঁচে থাকে। আমরাও আশাবাদী, স্রষ্টা আমাদের সহায় হোন।