নাটোর প্রতিনিধি : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে-বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এ সময় লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সহধর্মিণী বিএনপি নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।সোমবার (২২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের আলাইপুর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নাটোর সদর থানার ওসি মুনসুর রহমান, দৈনিক যুগান্তরের নাটোর প্রতিনিধি শহীদুল হক সরকার, বাংলাভিশনের স্থানীয় প্রতিনিধি কামরুল ইসলামসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করাসহ বিএনপির তিন কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে লাঠিচার্জ করে তাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে পুলিশ জানিয়েছে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ কোনো প্রকার বাধা দেয়নি। তাদের মিছিলের অনুমতি ছিল না। তবু তারা মিছিল করছিলেন এবং রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকালে নাটোর শহরের আলাইপুরস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস দুলুর পত্নি সাবিনা ইয়াসমিন ছবির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি কিছুদূর যাওয়ার পরই পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় দলের নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস দুলুর পত্নি সাবিনা ইয়াসমিনসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারও বিক্ষিপ্তভাবে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এসময় নাটোর সদর থানার ওসি মুনছুর রহমান ও সাংবাদিকসহ বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইটের আঘাতে চার গণমাধ্যম কর্মী শহিদুল হক সরকার, (যুগান্তর),কামরুল ইসলাম (বাংলাভিশন), বোরহান উদ্দিন বনি (এটিএন নিউজ) ও এসএটিভির ক্যামেরা পার্সন শরিফুর ইসলাম শরিফ আহত হন।বিএনপির নেতা সাবিনা ইয়াসমিন ছবি দাবি করেন, দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শুরুর আগেই তাদের নিরীহ নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ নির্বিচারে লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ ও কাঁদানো গ্যাস ছোড়ে। এ ঘটনায় তিনিসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে।নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের জন্য তাদের বলা হয়। কিন্তু তারা সেটি না করে সমাবেশ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অশান্ত অবস্থার সৃষ্টি করে। পাশাপাশি তারা মিছিল করছিলেন এবং রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করেন। অথচ তাদের মিছিলের অনুমতি ছিল না।তাদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের কথা বলতে গেলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট নিক্ষেপ করে। তবে পুলিশ কোনো লাঠিচার্জ করেনি। ধাওয়া করেছে মাত্র। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৫ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।