উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা
অরক্ষিত হয়ে পড়েছে উখিয়ার উপকূলের সবুজ বেষ্টনি। একদিকে স্থানীয় কাঠ চোর অন্যদিকে সাগর থেকে ধেয়ে আসা প্রচণ্ড ঢেউয়ে একের পর এক বিপন্ন হচ্ছে ঝাউগাছ। সম্প্রতি জোয়ারের প্রচণ্ড ধাক্কায় প্রায় দুই শতাধিক ঝাউগাছ পড়ে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমাল রক্ষায় সৃজিত ঝাউবাগান উজাড় হয়ে যাওয়ার ফলে অদূর ভবিষ্যতে দুর্যোগে উপকূলীয় জনজীবন বিপন্নের আশঙ্কা পরিবেশবাদীদের।
১৯৯১ সনের প্রলয় ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছাসের তা-বে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে তৎকালীন জেলা প্রশাসন উপকূলীয় এলাকায় ঝাউবাগান সৃজন করার উদ্যোগ নিয়ে তা যথা সময়ে বাস্তবায়ন করেন।
সরেজমিন, উখিয়া উপকূলের রেজু খালের মোহনা থেকে মনখালী এলাকাঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের তোড়ে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সমূহের ঝাউগাছগুলো পড়ে যায়। বনকর্মীরা পড়ে যাওয়া কিছু গাছ উদ্ধার করলেও অধিকাংশই স্থানীয়রা রাতের আঁধারে লুটপাঠ করে নিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক ইউপি সদস্য জাহেদুল আলম জানান, প্রতিরাতে ৭/৮টি করে বড়ো বড়ো ঝাউগাছ কাটা হলেও বনকর্মীরা এব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। স্থানীয় সংবাদকর্মী জাহাঙ্গীর আলম জানায়, ঝাউবাগান দখল করে বসবাসরত অবৈধ রোহিঙ্গা নাগরিক ও স্থানীয় যেসব পরিবার ঝাউবাগানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে তাদের মাধ্যমে ঝাউগাছ কর্তন ও পাচার করা হচ্ছে।
একাধিক লোকজন জানায়, পানের বরজ, বাড়িঘর নিমার্ণ কাজে এসব ঝাউগাছ ব্যবহার ও বাজারজাত করা হলেও বনকর্মীরা তা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। যে কারণে রেজুখালের মোহনা থেকে মনখালী পর্যন্ত উপকূল এখন ঝাউগাছ শূণ্য হয়ে পড়েছে।
ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম জানান, গত ৭/৮ দিনে ইনানী থেকে চোয়াংখালী পর্যন্ত উপকূলের ঝাউবাগানের প্রায় শতাধিক ঝাউগাছ পড়ে গেছে। রাতের আঁধারে বেশ কিছু গাছ স্থানীয়রা লুট করে নিয়ে গেছে।
উখিয়া উপজেলা নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি কবি আদিল উদ্দিন চৌধুরী জানান, উপকূলের পরিবেশ এখন সম্পূর্ণ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। যারা বন রক্ষায় নিয়োজিত তারাই বন ধ্বংস করছে। সুতরাং ঝাউগাছ নিধন হলে উপকূলের যে অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে তার জন্য বনবিভাগকে দায় বহন করতে হবে।
ইনানী বনরক্ষা সহায়ক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, উপকূলে পর্যটন পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে মাসিক সভায় বহুমুখী সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও কার্যত তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।