ভোলায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ভোলায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ভোলা: ভোলায় মেঘনার অতি জোয়ারের চাপে চার কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন ও দৌলতখান উপজেলার অন্তত ২৫টি গ্রাম।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

দু’দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। পানিতে ঘর, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও আসবাপপত্র হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার (২১ আগস্ট) মেঘনার পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) ছিল ১১৪ সেন্টিমিটার। এতে আরেক দফায় তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত কয়েকদিন থেকেই ঝুঁকির মুখে ছিল ভোলার ইলিশা ইউনিয়নের মুরাদসফিউল্লা গ্রামের সাজিকান্দি পয়েন্টের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। মেঘনার পানি বিপৎসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই পয়েন্ট দিয়ে ভেঙে যায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি। এতে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে তলিয়ে যায় মানুষের ঘরবাড়ি।

বর্তমানে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ইলিশা ইউনিয়নের তিনটি গ্রামসহ জেলার উপকূলবর্তী ২৫টি গ্রামের মানুষ। জোয়ারের পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গত দু’দিন ধরে অনেকের ঘরে রান্নার চুলা জ্বলছে না। অনেকেই তিনবেলা ঠিকমতো খেতে পাচ্ছেন না। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে। দ্রুত বাঁধ মেরামতের দাবি বানভাসি এসব মানুষের।

পানিবন্দি এলাকার নাছিমা বলেন, পানির মধ্যে দিন কাটাচ্ছি, কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। একই কথা জানালেন আরজু ও মিজান।

গৃহবধূ নুপুর বলেন, পরিবারের ১৪ জন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। পানিতে ঘর তলিয়ে যাওয়ায় রান্না হয়নি। ঘরের অনেক জিনিসপত্র ভেসে গেছে।

পূর্ব ইলিশা যুব ফাইন্ডেশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, জোয়ারের পানিতে এখানকার ১২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকে এখন দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। কেউ কেউ আবার খোলা আকাশের নিচে।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ ও উজানের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এমন জোয়ার হচ্ছে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান।

তিনি বলেন, জোয়ারের পানির চাপে তিন উপজেলার চার কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ার নেমে গেলে ভাঙা বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। বাঁধ সংস্কার করা হলে তখন আর মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।

এদিকে টেকসই বাঁধ মেরামতের মধ্য দিয়ে বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ লাগবের দাবি স্থানীয়দের।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন