ভোলা প্রতিনিধি : নদীতে পাঁচ ভাঙার পর আড়াই লাখ টাকা দিয়ে সাড়ে ৪ গন্ডা জমি কিনে ঘর করেছি’ কিন্তু ৬ মাসেই সেই ঘরটা ভেঙে গেছে। এখন কোথায় যাবো, কোথায় আশ্রয় নেব।কোনো ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছি না।কান্না জড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নদী ভাঙনের শিকার খাদিজা বেগম।তিনি বলেন, আমার স্বামী নদীতে মাছ ধরেন। বহু কষ্ট করে ঘরটি নির্মাণ করেছিলান। কিন্তু শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে ফেলেছি। নদীতে সব কেড়ে নিছে, স্বামী সন্তানদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে রয়েছি। চার ভাঙার পর সাড়ে ৩ গন্ডা জমিতে ঘর নির্মাণ করেছিলেন কহিনুর বেগম। তার ঘরও নদীর ভাঙনের মুখে তাই অন্যত্র ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন।তিনি বলেন, এখানে জমি কেনার পর সাত মাস বসবাস করেছি, এখন নদীতে সব কেড়ে নিছে। আমাদের আশ্রয়ের কোনো ঠিকানা নেই।শুধু খাদিজা বা কহিনুর নয়, তাদের মত একই অবস্থা ভাঙনকবলিত শতাধিক মানুষের। মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা নদীর তীরবর্তী মানুষ। সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খাল পয়েন্টের চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র ভাঙন চলছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে বিস্তীর্ণ জনপদ। এক সপ্তাহ ধরে নদীর ভাঙনে ভীটাহারা মানুষগুলো মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই আবার রাস্তার পাশে আশ্রয় নিচ্ছেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, জোড়খাল থেকে চর মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত চার কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন চলছে। মেঘনার তীব্র স্রোতে পাড় ভেঙে যাচ্ছে। নদী তীরের মানুষ অন্যত্র ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। এদের বেশিরভাগই জেলে। রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে শহর রক্ষা বাঁধসহ হাজার হাজার ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা।ভাঙনকবলিত বিবি আয়শা ও রহিমাসহ অন্যরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভয়াবহ ভাঙন চলছে। ঘর সরিয়ে নেওয়ার সময় পাচ্ছেন না তারা।রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ ভাঙন চলছে, এরই মধ্যে শতাধিক ঘর বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো ইউনিয়ন বিলীন হয়ে যাবে।ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, জরুরি ভিত্তিতে ৩শ মিটার এলাকায় জিও টিউব ফেলে ভাঙন ঠেকানো হচ্ছে। এখন কিছুটা রোধ হয়েছে। চার কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধ করা হবে।