কৃষকলীগ নেতার বাড়ি থেকে কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

কৃষকলীগ নেতার বাড়ি থেকে কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় কৃষকলীগের এক নেতার বাড়ি থেকে আশিক রানা (১৮) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ভোর ৩টার দিকে ওই নেতার বাড়ির নিচতলা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।কৃষকলীগের ওই নেতার নাম শরীফ হারুন অর রশিদ। তিনি উপজেলার বানা ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও বানা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি। আর নিহত আশিক কঠুরাকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী আলমগীর হোসেনের ছেলে। তিনি ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এ ঘটনায় কৃষকলীগ নেতা শরীফ হারুনের ছোট ভাই নজরুল শরীফসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় আশিক রানা বাড়িতে ছোট ভাইকে নিয়ে মায়ের সাথে থাকতেন। প্রতি দিনের ন্যায় রাতের খাবার শেষ করে শুয়ে পড়ে আশিক। কিন্তু রাত ১টার পর হারুন অর রশিদ আশিকের চাচা জাহাঙ্গীর আলমকে ফোন দিয়ে বলেন, তোমার ভাতিজা আমার ঘরে আটকে আছে, নিয়ে যাও। পরে চাচা জাহাঙ্গীর হোসেন ও আশিকের মা মরিয়াম বেগম ঘরে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে দ্রুত হারুন অর রশিদের বাড়িতে ছুটে যান তারা। সেখানে গিয়ে হারুনের ঘরে জানালা দিয়ে আশিকের গলায় গামছা পেছানো অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় তার মা ও চাচা। পরে পুলিশকে খবর দিলে সকালে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। কঠুরাকান্দি গ্রামের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, আশিকের পরিবারের সাথে হারুন অর রশিদের আগে থেকেই দ্বন্দ্ব ছিল।সম্প্রতি দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা মীমাংসাও হয় এবং একসাথেই চলাফেরা করছিল। কিন্তু হারুনের মেয়ের সাথে আশিকের প্রেমঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে ধারণা করছেন।আশিক রানার মা মরিয়াম বেগম বলেন, আমার ছেলেকে কৌশলে হারুন ও তার ভাই বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। তিনি এই হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। তবে প্রেমের বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি। বানা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ পলাতক ও বাড়ির সবাই থানা হেফাজতে থাকায় তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আশিকের চাচা ও বানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমাদের পরিবারের সাথে জমিজমা ও গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে হারুনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। রাত ১টার পর হারুন আমাকে ফোন দিয়ে জানান, ভাতিজা তার ঘরে আটকা আছে। তার ভাতিজাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, স্থানীয়দের সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সকালে ময়নাতদন্ত করার জন্য লাশ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে হত্যার সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ