নজর কেড়েছে হামাসের যে অস্ত্রগুলো

নজর কেড়েছে হামাসের যে অস্ত্রগুলো
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ; বৈশ্বিক সমালোচনা আর চাপের মুখে অবশেষে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।বৃহস্পতিবার (২০ মে) ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যুদ্ধবিরতির এই সম্মতি আসে। হামাস এবং ইসলামী জিহাদও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গত ১১ দিন ভয়াবহ ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বিশাল এলাকা। অন্যদিকে, ইসরায়েল এবং গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের মধ্যে চতুর্থবারের এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনিরাও কম জবাব দেয়নি। হামাসের রকেট হামলায় প্রাণ গেছে ১২ ইসরায়েলিরও।

জানা গেছে, হামাস গত কয়েকদিনে চার হাজারের বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। তার মধ্যে বেশ কিছু রকেট ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। সবমিলিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাতে ফিলিস্তিনিরা যে শক্তিমত্তা এবার দেখিয়েছে, তা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার আগেই বৃহস্পতিবার (২০ মে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিজেদেরকে বিজয়ী দাবি করে গাজাভিত্তিক প্রতিরোধকামী সংগঠন হামাস এবং ইসলামি জিহাদ আন্দোলন।

এ হামলার পর হামাসের উপ-প্রধান মুসা আবু মারজুক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আগামী এক বা দুই দিনের মধ্যে আমরা একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর আশা করছি। হামাস এবং জিহাদ আন্দোলনের পাল্টা আক্রমণ আমেরিকার অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। গাজা থেকে প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে চার হাজার রকেট ছুঁড়েছে। হামাস এবং হিজবুল্লাহর পাল্টা জবাবের মুখে আমেরিকা ইসরায়েলি নেতাদের হামলা কমানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৯ মে) দখলদার ইসরায়েলের ছয়টি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা চালানোর দাবি জানায় ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা ইয্যাদ্দিন কাস্সাম ব্রিগেড। দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি হামলার জবাবে বিমানঘাঁটিগুলোকে টার্গেট করা হয় বলে কাস্সাম ব্রিগেডের এক বিবৃতিতে জানানো হয়। তারা জানায়, হাতসুর, হাতসারিম, নিফাতিম, তেল নুফ, বিলমাখিম ও র‍্যামন ঘাঁটিতে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

হামাসের এসব হামলার পর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মাখাইমার আবুসাদা বলেছেন,  এবার (হামাসের) বোমা হামলার মাত্রা অনেক বেশি এবং এই সংঘাতের মধ্যে তারা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ঠিক কী করে ফেলতে পারে, তা দেখে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, হামাসের অস্ত্র গবেষণা, সংরক্ষণ ও উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এবার হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হামাসের নিক্ষেপ করা আইয়াশ আটকে দিতে পারেনি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানায়, ইসরায়েলের দিকে গাজা থেকে প্রায় দেড় হাজার রকেট ছোড়া হয়েছে। যার বেশির ভাগ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ দিয়ে ধ্বংস করা হয়।

এদিকে, গত হামাসের সামরিক শাখা ইয্যাদ্দিন কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের রামুন বিমানবন্দরে মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ‘আইয়াশ’ এর সাহায্যে হামলা চালানো হয়েছে। গাজা থেকে বিমানবন্দরটির দূরত্ব ২২০ কিলোমিটার, সেখানে ২৫০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে আঘাত হানা হয়েছে। ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আয়রন ডোম এটিকে আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি ইসরায়েলের যে কোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান সালেহ আল আরোয়ি জানান, আমরা ইসরায়েলে এ পর্যন্ত যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছি তার সবগুলোই পুরনো। আমাদের মূল অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এখনো ব্যবহারই করিনি।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন