মার্কিন কংগ্রেসের প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতা

মার্কিন কংগ্রেসের প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে একটি প্রস্তাব তোলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের (কংগ্রেস) নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার কথা উল্লেখ আছে।

প্রতিনিধি পরিষদে গত ১৬ মার্চ প্রস্তাবটি তোলা হয়। মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে প্রস্তাবটি প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবটি আনেন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজসহ অন্য তিনজন। পরে প্রস্তাবটি প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাবটির বিষয়বস্তু, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী স্মরণ।

প্রস্তাবটিতে স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশের জনগণ ও এ মাইলফলকের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের কথা বলা হয়েছে। উল্লেখ আছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার। সমর্থন দেওয়া হয়েছে গণতান্ত্রিক শাসনের মূলনীতির প্রতি, যার প্রতি বাংলাদেশের জনগণ অঙ্গীকারবদ্ধ। আর আছে মিয়ানমারে গণহত্যার মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবদানের কথা।

প্রস্তাবের প্রারম্ভে বাংলা জনপদের অবস্থান, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যের সমন্বয়ে গঠিত এখানকার প্রাচীন সভ্যতার কথা রয়েছে। আছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের প্রসঙ্গ আছে। দেশভাগের ফলে পূর্ব বাংলা যে পাকিস্তানের অংশ হয়, সে কথা উল্লেখ আছে।

ঐতিহাসিক বিবরণে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের প্রসঙ্গ আছে। এতে বলা হয়, সেই নির্বাচনে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পায় পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানি সেনা নেতৃত্ব নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্টো জারি করা হয় মার্শাল ল।

প্রস্তাবের বিবরণে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ৯ মাসের যুদ্ধে লাখো মানুষ শহীদ ও বাস্তুচ্যুত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।

বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম…আমাদের অতীতের মহান স্মৃতি জাগ্রত করে।’
প্রস্তাবের বিবরণে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে গণহত্যার মুখে পালিয়ে আসা ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ১৭ মার্চ শুরু হয়েছে। চলবে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার প্রতিপাদ্য ‘মুজিব চিরন্তন’। তবে প্রতিদিনের অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা প্রতিপাদ্য রয়েছে।

দেশ-বিদেশের অতিথিরা এ আয়োজনে যোগ দিচ্ছেন। প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ১৭ মার্চ ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। দ্বিতীয় বিশ্বনেতা হিসেবে আজ শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি ২২ মার্চ ঢাকায় আসবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ২৪ মার্চ ঢাকায় আসবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৬ মার্চ ঢাকায় আসবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের বিশ্বনেতা ও খ্যাতিমান ব্যক্তি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ আয়োজনের অংশ হচ্ছেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

পবিপ্রবি র‌্যাগিংয়ে আহত পাঁচ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি

বড়াইগ্রামে নির্যাতিত আ’লীগ কর্মীর বাড়িতে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী