বৈরুতে বিস্ফোরণ: নিহত বেড়ে ১৩৫, আহত ৫ হাজার

বৈরুতে বিস্ফোরণ: নিহত বেড়ে ১৩৫, আহত ৫ হাজার

গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বৈরুতে

স্থানীয় গভর্নর মারওয়ান আবৌদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৫ হাজারের বেশি মানুষ। শহরটির অর্ধেকের বেশি ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে রয়েছে। তাই হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

তিনি আরো জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈরুতে দুই সপ্তাহের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও শহরটির নিরাপত্তার দায়িত্ব সেবাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে গৃহহীন হয় পড়েছে অন্তত ৩ লাখ বাসিন্দা।

বিস্ফোরণের পর শহরটির হাসপাতালগুলোতে আহত রোগীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। স্থান সংকটের কারণে অনেক হাসপাতাল আর রোগী ভর্তি করতে পারছে না। অনেক জায়গায় হাসপাতালের বাইরে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে বৈরুতে

এদিকে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৯৯ জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন লেবাননে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অফ চ্যান্সারি আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি জানান, আহতদের মধ্যে ৭৮ জন প্রবাসী শ্রমিক এবং ২১ জন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সদস্য। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দূতাবাস সবসময় তাদের খোঁজ খবর রাখছে। অনেকে ইতোমধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদি হাসান ও রাসেল মিয়া, মাদারীপুরের মিজান এবং কুমিল্লার রেজাউল। তারা সবাই দেশটিতে বৈধ কর্মী হিসেবে গিয়েছিলেন।

এর আগে গতকাল বুধবার তিনি জানিয়েছিলেন, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দেশটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি বৈরুত বন্দরে অবস্থান করা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস বিজয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া বাকি ১৫ জন সামরিক সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণ দুটির তীব্রতা এতই বেশি ছিলো যে সেখানে ৩ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর তীব্রতা টের পাওয়া যায় বৈরুত শহর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরের অপর প্রান্তে অবস্থিত সাইপ্রাসেও। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের স্থাপনাও। বিস্ফোরণের পর শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছে, বৈরুতের বন্দরের কাছে একটি রাসায়নিক গুদাম ছিলো। যেখানে গত ৬ বছর ধরে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে ছিলো। সেই রাসায়নিক থেকেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় মৃতদের স্মরণে দেশটিতে তিনদিনে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন