খাল-বক্স কালভার্ট থেকে ৫৭ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ : মেয়র তাপস

খাল-বক্স কালভার্ট থেকে ৫৭ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ : মেয়র তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক ; ওয়াসার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর গত এক মাসে তিনটি খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট থেকে ৫৭ হাজার টন বর্জ্য-মাটি অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বুধবার নিয়মিত সাপ্তাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে শ্যামপুর খালে চলমান বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তিনি। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নিয়েছি ৩০ দিনের মতো হলো। এরই মাঝে ৫৭ হাজার মেট্টিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছি। আমার ধারণা, আগামী দুমাসে তা দুই লাখ মেট্টিক টন ছাড়িয়ে যাবে। নিজ অর্থায়নে আমরা এ কার্যক্রম চালিয়ে চাচ্ছি। আমি আশাবাদী, একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারব। যদিও এখন পর্যন্ত অত্যন্ত দুরূহ কাজ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। তাপস আরও বলেন, ২ জানুয়ারি থেকে আমরা ব্যাপক কর্মযজ্ঞ আরম্ভ করেছি। এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই যেন সব খাল পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশন ও প্রবাহের ব্যবস্থা করতে পারি। পরবর্তীতে আমরা দীর্ঘ মেয়াদী যে পরিকল্পনা নিয়েছি, খালের পাশের যে জমি দখল হয়েছে সেগুলো অবমুক্ত করে সেখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা, হেঁটে চলা, সাইকেল চালানোর ব্যবস্থা করা। যাতে করে মানুষজন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে এবং সেখানে যতটা সম্ভব নান্দনিক পরিবেশ গড়ে তুলব। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, শ্যামপুর অনেক বড় খাল, এখানে শাখা-প্রশাখা বেশি। কিভাবে সেগুলো দখল, বদ্ধ হয়ে আছে আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আবর্জনা-ময়লা স্তূপ হয়ে আছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময়ে এগুলো পরিষ্কার করা হয়নি। পানি প্রবাহ বা নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই। সামনের কর্মযজ্ঞ অত্যন্ত দুরূহ, ভয়াবহ পরিবেশ রয়েছে। এখানে একটি অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল রয়েছে। তাদের প্রকল্প চলমান। সেগুলোর সাথে এগুলোর সংযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে অব্যবস্থাপনা ও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করছি, তাদের খালগুলো যাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। এছাড়াও, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু স্থাপনা রয়েছে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন, সেখানে স্লুইচ গেটসহ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোও যাতে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। যদিও সেগুলো অচল রয়েছে। খালের দুপাশ দখলে রাজনৈতিক মদদ থাকার কথা শোনা যায়, আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমরা জোরালোভাবে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এরইমধ্যে মান্ডা খালের পাশে থাকা জায়গা দখলমুক্ত করেছি। খালের প্রশস্ততার জন্য সিএস জরিপে যা আছে, মানচিত্রে যা আছে, আমরা সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ জমি অবমুক্ত করব। এই এলাকার পানি দূষণের বড় কারণ শিল্প বর্জ্য, শিল্প বর্জ্য খালে এসে পড়ছে, এ প্রসঙ্গে তাপস বলেন, সবমিলিয়ে যেভাবে অপরিকল্পিতভাবে সবকিছু করা হয়েছে, তাতে কঠিন অবস্থা, দুরূহ অবস্থা বিরাজ করছে। এই এলাকার ব্যাপক কারখানা গড়ে উঠেছে। একসময় এই এলাকাকে শিল্প এলাকা হিসেবে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানে যত্রতত্রভাবে কারখানা হয়েছে। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা পরিপালন করা হয়নি। যার কারণে আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, খালগুলোতে শক্ত বর্জ্য বদ্ধ হয়ে গেছে, দূষিত পানি দ্বারা সেগুলো রুদ্ধ হয়ে গেছে। শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে দিকনির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এ বিষয়ে কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। এরই মাঝে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলেছি, যাতে আইনগুলো আরও কঠোরভাবে পরিপালন করা হয়। আশা করছি, পরিবেশ অধিদপ্তরও তাদের দায়িত্বগুলো সুচারুরূপে পালন করবে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, মুন্সী মো. আবুল হাসেম, কাজী মো. বোরহান উদ্দিন ও প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন