চট্টগ্রামে বড় চামড়া ৩৫০-৪০০ টাকা, দাপট নেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের

চট্টগ্রামে বড় চামড়া ৩৫০-৪০০ টাকা, দাপট নেই মৌসুমি ব্যবসায়ীদের

চট্টগ্রামে কোরবানির চামড়া নিয়ে এবার হাহাকার নেই। দাপট চোখে পড়েনি মৌসুমি ব্যবসায়ীরও। অন্য বছরের চেয়ে তুলনামূলকভাবে চামড়ার পরিমাণ কম বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। সে কারণে গত বছরের মতো চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

নগরের প্রধান চামড়ার আড়তগুলো আতুরারডিপো এলাকায়। বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া নিয়ে সেখানে বিক্রির জন্য আসেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। আবার প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বেশি চামড়া বিক্রি হয় নগরের চৌমুহনী এলাকায়। এই দুই স্থানে অন্যবারের মতো চামড়া চোখে পড়েনি। অন্যবারের মতো মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীও কম দেখা গেছে। এর বদলে আড়তদারেরা পাড়াভিত্তিক বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহ করেছেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির আহ্বায়ক মাহবুব আলমের সঙ্গে দেখা হয় চৌমুহনী এলাকায়। তিনি চামড়া সংগ্রহ করে গাড়িতে তুলছিলেন।

মাহবুব আলম সমাচারকে বলেন, ‘এবার চামড়া তুলনামূলক কম। করোনার কারণে অনেকে গরুর বদলে ছাগল কোরবানি দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। আমরা নিজেদের লোকের মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহ করেছি। অন্যান্য মৌসুমি লোকদের আনাগোনাও কম।’

এ ব্যবসায়ীর মতে এবার গরু ও ছাগল মিলে চার লাখেরও কম চামড়া সংগৃহীত হবে।

চট্টগ্রামে সমিতিভুক্ত আড়তদারের সংখ্যা ১১২ জন। এর বাইরে আরও অন্তত ১৫০ আড়তদার রয়েছে। এবার ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবার সেটা ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। গতবার চট্টগ্রামে প্রায় এক লাখ কাঁচা চামড়া অবিক্রীত থেকে গেছে। পুঁজির অভাবে চট্টগ্রামের আড়তদারেরা পর্যাপ্ত চামড়া কিনতে পারেননি। তখন ঢাকায় তাঁদের প্রায় ৪০ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছিল।

বকেয়া টাকা কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে আড়তদারেরা জানান। এ কারণে এবার চামড়া আর অবিক্রীত বা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে তাঁদের অভিমত। এ ছাড়া চামড়ার দামও তুলনামূলক কম।

জুয়েল শীলজানতে চাইলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের সমাচারকে বলেন, ‘চামড়া সংগ্রহ চলছে। আমরা কিনে নিচ্ছি চামড়া। তবে তুলনামূলক কম হবে বলে মনে হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু চামড়া গ্রামেও মানুষ লবণ দিয়ে রেখে দেন। তাঁরা পরে এখানে বিক্রি করেন। এবার অবিক্রীত বা চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা নেই।’

তিন-চার দিন পর কত চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, তা জানানো সম্ভব হবে বলে কাদের জানান। চট্টগ্রামে গত বছর গরুর চামড়া পাঁচ লাখ সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু প্রায় এক লাখ চামড়া অবিক্রীত থেকে যায়। এবার মোট চার লাখ চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনার কারণে এটা কমে এসেছ।

গতকাল বিকেলে চৌমুহনী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি বড় চামড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ছোট চামড়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রবিউল ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও পাড়া থেকে চামড়া সংগ্রহ করেছি। তবে দাম কম। এখান থেকে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করে দেব। চামড়া কম হওয়ায় এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীও কম।’

আড়তদারেরা চামড়া সংগ্রহ করে তাতে লবণ দেওয়ার জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। এ জন্য শ্রমিকও অগ্রিম ঠিক করে রাখা হয়। আতুরার ডিপো এলাকায় এই কর্মযজ্ঞ চলছে। এরপর ঢাকার ট্যানারির মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করা হবে। চট্টগ্রামে রিফ লেদার নামে একটি মাত্র ট্যানারি কারখানা চালু রয়েছে। বাকিগুলো ঢাকায়।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন