আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টিতে সভা করবে বিএনপি

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টিতে সভা করবে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৭ সালের এক-এগারো উপলক্ষে সোমবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে সভা করবে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ সেই ভয়ংকর কালো দিনকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই ষড়যন্ত্রের দিনে আওয়ামী লীগের কলঙ্কিত রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে ১১ জানুয়ারি (আজ সোমবার) বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করবে বিএনপি। গতকাল রোববার দুপুর ১২টায় রাজধানীর গুলশানের চেয়ারপারসন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গত শনিবার বিকালে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের লক্ষ্যে সংবিধানসম্মত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে বেআইনি সেনাসমর্থিত সরকার গঠন করা হয়। দেশের জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ বহুসংখ্যক রাজনৈতিক নেতাকে মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়। মূল লক্ষ্য ছিল দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে র্নিমূল করা। তিনি বলেন, ১/১১ এর বেআইনি সরকার পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা প্রদানের নীল নকশা বাস্তবায়ন করে। আজকের অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার তারই ধারাবাহিকতায় এ দেশের মানুষের আকাক্সিক্ষত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে আগামী বুধবার সারাদেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অথবা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এ ছাড়া আগামী ১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৫তম জন্মদিন পালন করবে দলটি। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিন আমদানিকরণে ভারতীয় হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ভ্যাকসিনপ্রাপ্তিকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে গেছে। এরপরও সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য জনগণের কাছে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। ফখরুল বলেন, ভ্যাকসিন সরকার সরাসরি না কিনে মধ্যস্বত্বভোগী নিয়োগ দিয়েছে দুর্নীতির জন্যে। সরকারি সুবিধাভোগী, পদবী ধারী মধ্যস্বত্বভোগী নিয়োগ নিয়ে নীতিগতভাবেই শুধু নয়, আইনগতভাবেও অপরাধমূলক একটা কাজ করেছে। সরকারের লাভজনক পদে নিয়োগকৃত কোনো ব্যক্তি, যিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা তার ভ্যাকসিন ক্রয়ে সম্পৃক্ততা বেআইনি ও অপরাধমূলক। মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন আমদানি প্রক্রিয়ায় অস্পষ্টতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির ফলে জনগণের এই টিকাপ্রাপ্তি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ভ্যাকসিন করে আসবে- এটা নিয়ে গোটা জাতির সঙ্গে আমরাও চরমভাবে উদ্বিগ্ন। এখন পর্যন্ত সরকার কোনো সুনির্দিষ্ট সময়ও নির্ধারণ করতে পারেনি। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনটা হচ্ছে জীবন রক্ষার করার একট বিষয়। এটা একটা অগ্রাধিকার। সেই ভ্যাকসিন নিয়েও তারা দুর্নীতি করছে যেটা আমরা পত্র-পত্রিকায়ে দেখছি। এই সরকার যে পুরোপুরিভাবে দায়িত্ব জ্ঞানহীন সরকার এবং জনগনের প্রতি যে তাদের কোনো রকম দায়-দায়িত্ব নেই, সেটাই এখানে প্রমাণিত হচ্ছে। টিকা আমদানির দায়িত্ব বির্তকিত বেক্সিমকো গ্রুপকে প্রদানের সিদ্ধান্তে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তারেক রহমানের সভাপতিত্বে গত শনিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় আরও অংশগ্রহণ করেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল জানান, বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সুস্থতা কামনা করা হয়েছে ও দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

মাদকের টাকার জন্য মা’কে হত্যা: নিজেই পুলিশের হাতে ধরা দিলেন ছেলে

জোরপূর্বক পদত্যাগের পর স্ট্রোকে মারা গেলেন হাজেরা তজু কলেজের উপাধ্যক্ষ