অর্থ পাচারকারীদের তথ্য জানাতে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিলেন হাইকোর্ট

অর্থ পাচারকারীদের তথ্য জানাতে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিলেন হাইকোর্ট

ঢাকা: বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে পরবর্তী তথ্য জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অর্থ পাচার বিষয়ে দুদকসহ কয়েকটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার প্রতিবেদন দাখিলের পর বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ২২ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব ধরনের তথ্য চেয়েছেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব, দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এরপর হাইকোর্টের আদেশের জবাব তৈরি করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে দুইবার বৈঠক করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।

সর্বশেষ গত সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে দুদক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও এনবিআরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রাজনীতিবিদরা নন, বিদেশে বেশি অর্থ পাচার করেন সরকারি চাকুরেরা। সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গোপনে কানাডার টরেন্টোতে অবস্থিত বাংলাদেশিদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে, কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য এসেছে, যদিও এটি সামগ্রিক তথ্য নয়, সেটিতে আমি অবাক হয়েছি। সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলে-মেয়েরা সেখানে থাকে।

মন্ত্রী বলেন, আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে এবং এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এছাড়া কিছু আছেন তৈরি পোশাকশিল্পের ব্যবসায়ী। আমরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছি। পাচারে শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা। তবে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যে তথ্য বের হয়, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে, আসলে সংখ্যাটি তত নয়।

পাচারের দায় বিদেশি সরকারও এড়াতে পারে না উল্লেখ করে আব্দুল মোমেন বলেন, যেমন সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে টাকা রাখলেন, সেই তথ্য আমাদের দেয় না। তারা ট্রান্সপারেন্সির কথা বলে, কিন্তু যদি বলি কার কার টাকা আছে, সেই তথ্য দাও, তখন তারা দেয় না। এটি একটি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।

এ বিষয়ে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন। রুলে টাকা পাচারকারী সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যান এবং ঢাকা জেলা প্রশাসককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ রুল বিবেচনায় থাকা অবস্থায় বিদেশে টাকা পাচারকারীদের নাম-ঠিকানাসহ সব ধরনের তথ্য (মামলাসহ, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা) প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

ঈদগাঁও–ঈদগড় সড়কে গুম ও ডাকাতি দমনে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি

শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি