নবম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় সাংবাদিকদের কর কর্তন নিয়ে রুল

নবম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় সাংবাদিকদের কর কর্তন নিয়ে রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : নবম ওয়েজ বোর্ডের আওতায় মালিকের পরিবর্তে সংবাদকর্মী ও প্রেস শ্রমিকদের আয়কর ও আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) কর (ট্যাক্স) কর্তন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের দ্বাদশ অধ্যায়ে মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডে দ্বাদশ অধ্যায়ে সংযুক্ত সাংবাদিক ও প্রেস শ্রমিকদের আয়কর ও আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) সংক্রান্ত বিধান কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করে আইনজীবী ড. কাজী আকতার হামিদ ও রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। এর আগে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানিতে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদের সুপারিশ হিসেবে গ্রহণ করে জারি নবম মজুরি বোর্ডের গেজেটের দ্বাদশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের বেতনের উপর আরোপিত আয়কর সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রশাসনিক কর্মচারীদের কর্তৃক তাদের নিজ নিজ আয় হতে প্রদান করতে হবে। সকল শ্রেণির সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক এবং প্রশাসনিক কর্মচারীদের প্রত্যেক বছরে অথবা তার অংশ বিশেষ ছয় মাস বা এর অধিক সময় চাকরির জন্য সর্বশেষ প্রাপ্ত বেতনের ভিত্তিতে নির্ধারিত এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) হিসাবে প্রাপ্য হবেন। গত রোববার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’র কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুজ্জামান এই দুটি বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একটি রায় অনুযায়ী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকেই সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কর্মচারীদের বেতনের ওপর আয়কর পরিশোধ করতে হবে। সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ আয়কর পরিশোধ করতে দায়বদ্ধ এবং বাধ্য। কিন্তু নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডে আয়কর চাপানো হয়েছে সাংবাদিক ও কর্মচারীদের ওপর। এছাড়া নবম মজুরি বোর্ডে সপ্তম অধ্যায়ে দুইটি আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) দেয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও মন্ত্রিপরিষদ একটি মূল বেতনের সমান আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি) দেয়ার সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশটিও নবম মজুরি বোর্ডের গেজেটের দ্বাদশ অধ্যায়ে গ্রহণ করা হয়েছে; যা স্ববিরোধী বা সাংঘর্ষিক। ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন। দীর্ঘদিন বিষয়টি ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়। পরে বিচারপতি নিজামুল হক ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। তার ভিত্তিতে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ওয়েজ বোর্ডের গেজেট প্রকাশ করে সরকার।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সলঙ্গায় ৪০ কেজি গাঁজাসহ ২জন মাদক কারবারী আটক

শিবচরে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, নৌ-র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত