মওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মওলানা ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী এবং টাঙ্গাইলের সন্তোষে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সন্তোষে তার মাজারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং আলোচনা সভা। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবারের মতো এবারও পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার দেওয়া এক বানীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সব সময় ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন। তিনি আরো বলেন, জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে তিনি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন। মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এক অবিস্মরণীয় নাম। ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ বিরোধেী অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। তিনি বলেন, তাঁর (ভাসানী) নেতৃত্বের ভিত্তি ছিল সমাজে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ, কৃষক-শ্রমিক-সাধারণ জনগণ। ‘তেভাগা’ ও ‘লাঙল যার জমি তার’ আন্দোলনসহ তিনি অধিকার বঞ্চিত অবহেলিত মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বলেন, ক্ষমতার কাছে থাকলেও ক্ষমতার মোহ তাঁকে কখনো আবিস্ট করতে পারেনি। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে একজন মানুষ। রাষ্ট্রপতি বলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী দীর্ঘ কর্মজীবনে দেশ ও জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আদর্শ নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবে বলে রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন।
অন্যদিকে, গতকাল সোমবার দেয়া এক বানীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মওলানা ভাসানী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন কাজ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মওলানা ভাসানী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন কাজ করে গেছেন। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকদের অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধেদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার ও প্রতিবাদী। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর আদর্শিক ঐক্য ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শোষণ, বঞ্চনাহীন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী’র আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ