ঢাকা: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা ও ঈমানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (০৮ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দুটি অত্যাধুনিক এমআই ১৭১ ই হেলিকপ্টার ‘বীর শ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ’ এবং ‘বীর শ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফ’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দুটি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বিজিবি এয়ার উইংয়ের যাত্রা শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস এর ৩য় ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে বলেছিলেন- এ বাহিনী দেশের সীমান্ত রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ঈমানের সঙ্গে কাজ করো, সৎ পথে থেকো, দেশকে ভালোবেসো…। এ কথাটা শুধু বিজিবি না, বরং বাংলাদেশের সকলের জন্য প্রযোজ্য। শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি সকলে জাতির পিতার এই নির্দেশনা মেনে চলবে। বিজিবি সদস্যরাও এই নির্দেশনা মেনে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা ও ঈমানের সাথে দায়িত্ব পালন করে এই বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন। একদিন এ বাহিনীকে শ্রেষ্ঠ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলবেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটেছে যেটা অনাকাঙ্ক্ষিত। এই ধরনের ঘটনা আর ঘটুক সেটা আমরা চাই না। অনেক প্রাণ ঝরেছে, যারা মারা গেছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা নিজেদের যেমন ক্ষতি করেছে, বাহিনীর ক্ষতি করেছে, দেশের ক্ষতি করেছে। ভবিষ্যতে আমি আশা করি এ জাতীয় ঘটনা যেন আর না ঘটে। বিজিবিতে এয়ার উইং চালু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবি এখন অন্যান্য বাহিনীর মতো ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে উন্নীত হয়েছে। ২টি হেলিকপ্টার উদ্বোধনের মাধ্যমে আমি আজ বিজিবিকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে ঘোষণা করছি। আজকে থেকে বিজিবি ত্রিমাত্রিক বাহিনী।
তিনি বলেন, বিজিবিতে হেলিকপ্টার সংযোজনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ। বিজিবি এয়ার উইংয়ের এই যাত্রা বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করবে বলে আমার বিশ্বাস। শেখ হাসিনা বলেন, এখন থেকে বিজিবি দেশমাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি অর্পিত দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে জলে, স্থলে ও আকাশপথে বিচরণ করবে। এটি শুধুমাত্র বিজিবির উন্নতি নয়, মুজিববর্ষে এটি দেশবাসীর জন্যও অত্যন্ত গৌরবের ও আনন্দের বলে আমি মনে করি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিজিবিতে আরও জনবল বাড়াতে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাহিনীতে আরও ১৫ হাজার জনবল বৃদ্ধির পরিকল্পনা করা হয়েছে যা তিনটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। উন্নত প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি সুশৃঙ্খল ও দক্ষ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। প্রশিক্ষণের জন্য আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি। পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তর প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।