জেলা শিশু আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, রিফাত হত্যা মানুষের মনে মারাত্মকভাবে দাগ কেটেছে। এ মামলায় রিয়াজ নামের একজন সাক্ষী সৌদি আরব চলে যাওয়ায় তার সাক্ষগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তবে আর কোনো সাক্ষীই অনুপস্থিত ছিলেন না। আমরা আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছি বলে মনে করছি। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশা করছি। আসামিক্ষের আইনজীবী নারগিস পারভিন সুরমা বলেন, অন্য আর উৎসুক মানুষের মতো আমার মক্কেলও ঘটনাস্থলে শুধু উপস্থিত ছিল। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক বা যোগাযোগ ছিল না এবং এ বিষয়ে কোনো প্রমাণও আদালতে কেউ উপস্থাপন করতে পারেনি। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শাহজাহান মিয়া এবং গোলাম মোস্তফা কাদের বলেন, হত্যার ঘটনায় অতিরিক্ত বেশকিছু সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল সাক্ষী ২০ থেকে ২৫ জন। সঙ্গে ডাক্তার ও পুলিশ কর্মকর্তা মিলে ৪০ থেকে ৪৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দিতে জড়িতদের বিষয়ে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব ছিল। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করায় কিছু কিছু বিষয়ে বিভ্রান্তি দেখা গেছে। গত ১৪ অক্টোবর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায়ের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এরমধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। এরপর ১৩ জানুয়ারি থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। মোট ৭৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেন। আর বাকি চারজনকে বেকসুর খালাস দেন।