তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি দুই জনেরই (শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া) আইনজীবী হয়েছিলেন, কারণ তার রাজনৈতিক কোনো পরিচয় ছিল না। আর সেসময় রাজনৈতিক পরিচয় থাকা অনেক আইনজীবীই বিভিন্ন কারণে ওই দুইজনকে আইনি সহায়তা দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের রাজনীতির সাথেও তিনি কখনো জড়িত হননি, ইচ্ছাকৃতভাবে দূরে থেকেছেন। ফলে যে কোনো রাজনৈতিক দলের লোকই আইনি সমস্যা নিয়ে তার দ্বারস্থ হতে পারতেন। তিনি যেহেতু কোনো দল করেননি, তাই সব রাজনৈতিক দলের লোকই তার কাছে যেত এবং তার ওপর ভরসা করতে পারতো। রফিকুল হক ১৯৮৯-৯০ সালে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া যে কোনো মামলায় আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেওে সবসময় তিনি নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতেন । তার বয়স ৮০ বছরের বেশি হওয়ার পরও তিনি ব্যাপক পড়ালেখা করে প্রস্তুতি নিয়ে আদালতে যেতেন। রফিক-উল হক তার ব্যক্তিগত আয় থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে চিকিৎসার উন্নয়নের জন্য দান করেছেন। একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হিসেবে তার আয় ছিল অনেক। আর সেই হারেই তিনি দানও করতেন। তিনি তার জীবনে কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ অর্থ দান করে গেছেন। আর এই বিষয়ে তিনি খুব একটা কথাও বলতেন না। আদ দ্বীন হাসপাতালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও বেশ কয়েকটি হাসপাতাল তৈরির পেছনে তার বড় ভূমিকা রয়েছে।
বারডেম হাসপাতালের একটি বিশেষ বিভাগ তৈরিতে বড় অঙ্কের অনুদান দেয়ার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে ঢাকার বাইরে কয়েকটি সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। এছাড়া ঢাকার আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালের জন্যও তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করেছেন। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দেশের এই প্রবীণ আইনজীবী। তার বয়স হয়েছির ৮৫ বছর। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আদ দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কয়েকদিন আগে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।